চলমান বিশ্বকাপে আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যদিকে সেমিতে জায়গা করে নিতে প্রোটিয়াদের ৪৩৮ রানে হারাতে হতো আফগানিস্তানের। তাই কাগজে-কলমের হিসেবে এই ম্যাচে কোনো দলেরই চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।
লিগ পর্বে দুই দলের শেষ ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আফগানদের সংগ্রহ ২৪৪ রান। ১০৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন আজমত।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ (শুক্রবার) টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল। তাদের শুরুটা ধীরস্থির হলেও আস্তে আস্তে তারা রানের গতি বাড়াতে থাকে। তবে ৪১ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর খেই হারায় আফগান ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে ব্যাটারদের যাওয়া-আসায় তারা ১১৬ রানেই ৬ উইকেট হারায়। সেখান থেকে বলতে গেলে দলকে একাই টেনে তুলেছেন ওমরজাই। লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করায় তার সেঞ্চুরি পাওয়াটা কিছুটা কঠিনই। এদিন সেটি প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ওমরজাই। শেষ পর্যন্ত অপর সতীর্থ রানআউটে কাটা পড়লে তাকে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকার আক্ষেপে পুড়তে হয়।
এছাড়া শেষদিকে স্পিনার নুর আহমেদ ওমরজাইকে বেশ ভালো সঙ্গ দিয়েছেন। তার ২৬ রানের ছোট্ট অথচ কার্যকর ইনিংসে মান বাঁচে আফগানদের। এর আগে আফগানরা দুইশ পেরোনো নিয়ে শঙ্কায় ছিল। প্রোটিয়াদের হয়ে এদিন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন পেসার জেরাল্ড কোয়েটজে। ওয়ানডেতে নিজের সেরা এই বোলিং ফিগার পূর্ণ করতে তিনি ১০ ওভারে ৪৪ রান খরচ করেছেন।
নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা সময় পার করছে আফগানিস্তান। ভাগ্য আরেকটু সহায় হলে তারা এবার সেমিফাইনালও খেলতে পারত। অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অতিমানবীয় ইনিংস তাতে ছেদ ঘটিয়েছে। তবুও আসরের শেষটা জয় দিয়ে রাঙানোর লক্ষ্যে আজ প্রোটিয়াদের মুখোমুখি আফগানিস্তান। প্রথম ইনিংসে তাদের বিপর্যয়টা শুরু হয় দলীয় ৪১ রানে। ফর্মে থাকা ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ দুজনের উইকেটই পরপর হারায় আফগানরা। প্রোটিয়াদের প্রথম ব্রেকথ্রু আসে কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে। তার ফুল লেংথের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে থাকা হেইনরিখ ক্লাসেনের হাতে ধরা পড়েন গুরবাজ। ২২ বলে তিনি ২৫ রান করেন।
পরের ৭ বলে আফগানরা কোনো রান পায়নি। ফলে কিছুটা চাপ তৈরি হয় ব্যাটারদের ওপর। সেই সুযোগে কোয়েটজে শর্ট বলের ডেলিভারিতে ফাঁদ পাতেন ইব্রাহিমের জন্য। তিনিও পুল শট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া ইব্রাহিমকে এদিন ব্যাট হাতে কিছুটা সংগ্রাম করতে হয়েছে। ৩০ বলে তিনি করেন ১৫ রান। মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে ফিরেন আফগান অধিনায়ক শহিদীও। মহারাজের বলে ব্যক্তিগত মাত্র ২ রানেই তিনি ধরা পড়েন ডি ককের গ্লাভসে।
এরপর ওমরজাইকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামলানোর চেষ্টা চালান রহমত শাহ। সেই চেষ্টায় তারা অবশ্য বেশিদূর আগাতে পারেননি। দুজনের ৪৯ রানের জুটি ভেঙে রহমত বিদায় নেন ব্যক্তিগত ২৬ রানে। লুঙ্গি এনগিডির বেশ বাইরের বল তার ব্যাটের কানায় লেগে ওপরে ওঠে যায়। প্রথমে ক্যাচ ফসকে গেলেও পরে তালুবন্দী করেন ডেভিড মিলার। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানেই ফেরেন ইকরাম আলিখিল ও মোহাম্মদ নবি। দুজনই যথাক্রমে কোয়েটজে ও এনগিডির বলে ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। ১১৬ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহ গড়া নিয়ে শঙ্কায় পড়ে যায় আফগানরা।
তবে ওমরজাইয়ের সঙ্গে রশিদ খান ও নুর আহমেদের দুটি মাঝারি মানের জুটি তাদের ইনিংস মেরামতে বেশ কাজে দিয়েছে। রশিদ ১৪ ও নুর করেছেন ২৬ রান। এছাড়া ওমরজাইকে বলার মতো সেভাবে কেউই আর সঙ্গ দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১০৭ বলের ইনিংসে তিনি ৭টি চার ও তিন ছক্কায় ৯৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেছেন কোয়েটজে। এছাড়া এনগিডি ও মহারাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম