শুক্রবার (১৪ মে) পবিত্র ঈদ-উল ফিতর। তাই পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে দেশে চলমান লকডাউনের মধ্যে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ভোর থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী হাজার হাজার যাত্রীর ঢল, যানবাহনের উপচে পড়া ভীড়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল থেকেই পারের জন্য শিমুলিয়া ঘাটে হাজার হাজার জনস্রোত ও শহস্রাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক অপেক্ষায় রয়েছে।
করোনা সংক্রমণরোধে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল গত ২৪ এপ্রিল থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশে সব ধরনের গণপরিবহনও বন্ধ রয়েছে।
গত কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গমুখী যাত্রীর চাপ অব্যাহত থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে ঘাট এলাকায়। সকাল থেকে যানবাহনসহ যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় করছেন বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ।
শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, ঈদকে কেন্দ্র করেই দক্ষিণবঙ্গ গামী যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের বর্তমানে বহরে থাকা ১৫টি ফেরি দিয়েই দিনে ও রাতে যাত্রী পারাপার করানো হচ্ছে। শিমুলিয়ার ১-২-৩ নাম্বার ঘাটে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। পন্টুনে মানুষ গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। নেই কোন কোন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপও। যাত্রীরা দুর্ঘটনার তোয়াক্কা না করেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে উঠে নিজ গন্তব্যে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছেন।
আগামীকাল শুক্রবার ঈদের কারণে ছুটির দিন হওয়ায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়েছে শিমুলিয়া ঘাটে। মূলত ঈদকে কেন্দ্র করেই ঘাটে সহস্রাধিক এই জনস্রোত। ফেরিতে পণ্যবাহি ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সের সাথে যাত্রীদেরও পার করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব গাড়ি পার করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক মোহাম্মদ সোলেমান জানান, শিমুলিয়া ঘাট থেকে নিষেধ অমান্য করে ট্রলার যোগে যাত্রী পারাপার চলছে।
সকাল থেকেই ৩০ থেকে ৪০টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চলাচল করতে দেখা গেছে। এ নৌরুটে ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পাড়ি জমাচ্ছেন। তবে ট্রলার চালক-মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পদ্মা নদীবক্ষে নৌপুলিশের টহল চলছে।
তবে এ নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্পিডবোট ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিগুলোতে চাপ বৃদ্ধি পয়েছে। তবে যাত্রীদের কাউকেই স্বাস্থ্যিবিধি মানতে দেখা যায়নি বলে এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (টিআই) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন জানান, শিমুলিয়া ঘাট এলাকা থেকে নিষেধ অমান্য করে যাত্রী বহন করা ট্রলারের মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ হিলাল উদ্দিন আরো বলেন, ফেরি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাকসহ প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ও পারাপার করা হচ্ছে। তবে ফেরি টার্মিনাল গুলোতে যাত্রীরা ভীড় করে থাকার কারণে বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলো যানবাহন আনলোড করতে দেরি হচ্ছে। তাই এপার থেকে ফেরি ছাড়তে অনেকটা সময় বেশি লাগছে। এই ঘাটে সকল ধরনের যানবাহন মিলে সহস্রাধিক গাড়ি ও কয়েক হাজার যাত্রী পারাপারের অপক্ষায় রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম