১৩ দল, ১৫৬ ম্যাচ আর এক চ্যাম্পিয়ন! অনেক দিন ধরেই অনেক আলোচনা, পর্যালোচনা হয়েছে, এরপরই মাঠে গড়িয়েছে ওয়ানডে সুপার লিগ। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করে যার শীর্ষে চলে এসেছে বাংলাদেশ।
সুপার লিগের প্রধানতম লক্ষ্য-উদ্দেশ্যই ছিল, যেন অগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আর সিরিজ কমিয়ে আনা যায়। যেমন বাংলাদেশের তৃতীয় ওয়ানডেটার কথাই ধরুন না, অন্য সময় হলে এ ম্যাচটা হয়ে পড়ত নেহায়েত নিয়ম রক্ষার। কিন্তু সুপার লিগ আছে বলেই সে ম্যাচটাতেও পূর্ণ শক্তির দলই নামাতে হবে টাইগারদের, পাছে দশটা মহামূল্য পয়েন্ট না ছুটে যায়! আবার ছোট দলগুলোর বিপক্ষে সিরিজও এখন বড় দলের বিপক্ষে সিরিজগুলোর মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ; কারণ? ওই যে, ম্যাচপ্রতি দশ পয়েন্ট!
যেভাবে তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ
ওয়ানডে সুপার লিগের চ্যাম্পিয়ন তো নির্ধারণ হবেই, এই লিগ দিয়েই নির্ধারিত হবে আগামী বিশ্বকাপে খেলবে কোন দশ দল। আগামী ২০২৩ সালে অক্টোবর নভেম্বরে ভারতে বসবে বিশ্বকাপের পরের আসর। স্বাগতিক হিসেবে ভারত খেলবে সরাসরি। তাদের ছাড়া সাত শীর্ষ দল উঠে যাবে বিশ্বকাপে। আর শীর্ষ আটে না থাকলেও সমস্যা নেই। পাঁচ সহযোগী দলের সঙ্গে বাছাইপর্ব খেলে চলে আসা যাবে বিশ্বকাপে। সে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বই নির্ধারণ করবে দশ দলের বিশ্বকাপের বাকি দুই দল হবে কারা। সব দল সুপার লিগের প্রতিটি জয়ের জন্য পাবে দশ পয়েন্ট, টাই আর খেলা পণ্ড হলে পাবে পাঁচ পয়েন্ট। আর হারের জন্য নেই কোনো পয়েন্ট। এ লিগে প্রতিটি দলের জন্য থাকবে আটটি করে সিরিজ।
তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো দলগুলো সব দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পাবে না। ১২ দলের ৮টার বিপক্ষে খেলবে একে অপরে। যাতে থাকবে সর্বমোট ২৪টি লিগ ম্যাচ। যার ১২ টা থাকবে হোম আর বাকি ১২টা অ্যাওয়ে।
এই নতুন নিয়মের লিগেই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে আটটি। জয় পাঁঁচটিতে, হার তিনটি। পয়েন্ট ৫০। বাংলাদেশের চেয়ে একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে ইংল্যান্ড, তাদের জয় ৪ ম্যাচে। পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া ৬টি ম্যাচ খেলে ৪ জয় নিয়ে পেয়েছে ৪০ পয়েন্ট। ফলে পঞ্চম জয়ে বাংলাদেশ টপকে গেছে তাদের সবাইকে, উঠে এসেছে শীর্ষে।
তবে এতে কিছু অসুবিধা আছে বৈকি! এতে সিরিজ খেলতে হবে আটটি, যার ফলে বাকি থেকে যায় আরও ৪ দল। সম্ভাবনা আছে আপনি দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দলের মুখোমুখি হওয়া ছাড়াই পৌঁছে যেতে পারেন শীর্ষে, সেখানে থেকে করতে পারেন লিগ শেষও। তবে ২০১৮ সালে আইসিসি বলেছিল ম্যাচগুলো ফেলা হবে তৎকালীন র্যাঙ্কিংয়ের হিসেবে।
এমনিতেই ঠাসবুনটের সূচি। তবে এরপরও অবশ্য চাইলে দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনায় নিশ্চিত হতে পারে সূচির বাইরের সিরিজ। আগামী বছর জুনেই তো, শ্রীলঙ্কার খেলার কথা আছে অজি ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, যা নেই সূচিতে। তেমনিভাবে এই সময়ে আফগানিস্তানের সিরিজ আছে নয়টা, যার একটা থাকছে সূচির বাইরে।
এ তো গেল লিগ চলাকালে হিসেব। লিগের শেষে বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি হিসেবে সিরিজ যে খেলা হবে তা বলাই বাহুল্য। তবে এই সুপার লিগের ফলে বৃহৎ পরিসরে ক্রিকেট থেকে মুছে যাবে অগুরুত্বপূর্ণ সব সিরিজ।