খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

অহংকারীকে মহান আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না!

হাফিজ মাছুম আহমদ

অহংকার একটি অপগুণ। প্রচলিত কথায় বলা হয় অহংকার পতনের মূল। মানুষের সবগুণগুলোকে গিলে খায় এই অপগুণ। কোনো মানুষেরই অহংকার করার যোগ্যতা নেই।

কারণ মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে বা ধারণ করে তার সবকিছুই মহান স্রষ্টা আল্লাহর দয়া। আল্লাহর দয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে অহংকারী হওয়া অকৃতজ্ঞতারই প্রকাশ। যে কারণে মহান আল্লাহ দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।

এটি আল কোরআনে দেওয়া মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা। অহংকারী হওয়া মানেই আল্লাহর নির্দেশ অস্বীকার করা। বান্দা যাতে অহংকারী না হয় সে বিষয়ে কোরআনের একাধিক স্থানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূরা লোকমানের ১৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘অহংকারবশে কাউকে মুখ ভেংচি দিও না, মানুষকে অবজ্ঞা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।
সূরা মুমিনের ২৭ নম্বর আয়াতেও অহংকারী হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে এভাবে— ‘মূসা বলল, যারা হিসাব দিবসের প্রতি বিশ্বাস করে না, এমন প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমার ও তোমাদের প্রভুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে নিয়েছি।

সূরা আন নাহলের একটি আয়াত এ প্রসঙ্গে স্মরণযোগ্য— ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারীদের ভালোবাসেন না।

অহংকার মানুষের ইমান হরণ করে। বলা হয়, প্রথম পাপের ঘটনা ঘটেছিল অহংকারকে কেন্দ্র করে। আল্লাহ প্রথম মানব আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেন। আদম (আ.)-কে সিজদা করার জন্য ফেরেশতাদের নির্দেশ দেন। আদম (আ.)-এর চেয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভেবে ইবলিশ আল্লাহর এই নির্দেশ অমান্য করে এবং সে শয়তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সূরা বাকারার ৩৪ নম্বর আয়াতে বিষয়টি তুলে ধরে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘এবং আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম আদমকে সিজদা কর তখন ইবলিশ ছাড়া সবাই সিজদা করল, সে নির্দেশ পালনে অস্বীকার করল এবং অহংকার করল। ফলে সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হলো।

অহংকার করার যোগ্য একমাত্র আল্লাহই। এটি মানুষের জন্য নিষিদ্ধ বা হারাম বিষয়। মানুষ সব ক্ষেত্রে আল্লাহর মুখাপেক্ষী। যে নিজেই অন্যের মুখাপেক্ষী তার পক্ষে অহংকার শোভনীয় নয়। এ বিষয়ে মুসলিম শরিফের একটি হাদিস খুবই তাৎপর্যের দাবিদার। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, শ্রেষ্ঠত্ব আমার পোশাক এবং অহংকার আমার চাদর। যে এ দুটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চায়, তাকে আমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।

সোজা কথায় অহংকারীকে আল্লাহ জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এই কঠিন সাজা থেকে রক্ষা পেতে হলে অহংকারীবোধ থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে বড়াই করা বন্ধ করতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সব ধরনের অহংকার থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!