খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৩
  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

অসাধু ব্যবসায়ীরা তৎপর, বাজারে সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও সয়াবিনের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব সরকারের তরফ থেকে প্রত্যাখ্যান করার পরও অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে হঠাৎ দোকান থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই ভোজ্য তেল। আর এই সুযোগে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে কোন কোন বিক্রেতা।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি দেশে সর্বশেষ বাড়ানো হয় সয়াবিন তেলের দাম। এরপর নানা অজুহাতে আরেকদফা দাম বাড়ানোর পায়তারা করতে থাকে ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলোতে সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়। স্টকে থাকলেও ঘাটতির দোহাই দিয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে থাকে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা।

খুলনা বড় বাজারের পাইকারী তেল ব্যবসায়ী মাহিন ট্রেডার্সের মালিক মারুফ হাসান বলেন, বাজারে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। একমাস ধরে চলছে এ অবস্থা। সর্বকালের সর্ব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবার। সব তেলের মিল বন্ধ। শুধুমাত্র সিটি ওয়েল মিল খোলা। যা পাওয়া যাচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। আগে আমেরিকা থেকে একটন তেল আনতে কোম্পানীগুলোর ৬০ ডলারের মতো খরচ পড়ত। এখন সেখানে ওই পরিমাণ আনতে একশ’ ডলারের মতো খরচ হয়।

ওই বাজারের ব্যবসায়ী রাজু হাওলাদার জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে। প্রতিটি দেশ তাদের খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছে। তারা অধিক মজুদ করছে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ তেলের প্রয়োজন হয় তা আসছেনা। প্রয়োজনের তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেলে তার দাম একটু বাড়ে।

অপর ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, যুদ্ধের প্রভাবে জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে পরিবহন খরচ। দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের কোন হাত নেই। সরকার তেলের ওপর থেকে ট্যাক্স কমিয়ে নিলেও এর কোন প্রভাব পড়বেনা। পাইকারী হিসেবে ১৮০ টাকায় খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। যা গত ১৫ দিন আগেও তিনি ১৬০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বড় বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে যথেষ্ঠ পরিমাণ তেল মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এর মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্টরা বাজার ব্যবস্থার প্রতি উদাসীন। তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে তেলের দাম সহসা বৃদ্ধি পেতনা। যুদ্ধের খবর পেয়ে রাতারাতি তেলের দাম বৃদ্ধি করছে ব্যবসায়ীরা। তেল রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে আসেনা, আমেরিকা ও ব্রাজিল থেকে আসে। সেখানে কোন সংঘাত বাধেনি। তাহলে তেলের দাম বাড়ল কেন?

নগরীর পশ্চিম রূপসা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তফা জানান, যে পরিমাণ তেলের প্রয়োজন হয় তা তিনি পাচ্ছেনা। গত কয়েকদিন ধরেও তেল কোম্পানীর লোকদের দেখা নেই। প্রতিকেজি খোলা তেল ১৯০ টাকায়, আর পাঁচ লিটারের এক বোতল ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

মিস্ত্রি পাড়া বাজারের ব্যবসায়ী রইজউদ্দিন জানান, পাঁচ লিটারের তেলের কোন বোতল দোকানে নেই। এক লিটার ও দুই লিটারের চারটি বোতল রয়েছে। যা আছে তা তার প্রয়োজন হবে।

মির্জাপুরের বাসিন্দা চামেলী আক্তার হিয়া বলেন, তেল কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও মিলছেনা বোতল। অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার কথা বললেও দোকানী তা দিচ্ছেনা।

এদিকে আজ বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমাদের মজুত যথেষ্ট পরিমাণে আছে। সব আমাদের হাতে আছে, কোনোটার সমস্যা নেই। হঠাৎ করে টিসিবি সিদ্ধান্ত নেয় এক কোটি মানুষকে পণ্য দেবে, সে ব্যবস্থাও তারা করেছে।

পণ্যের দাম বিষয়ে কেউ আইন মানেন না-সাংবাদিকরা মন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, আমরা আরও অ্যাকটিভ (সক্রিয়) হবে। ভোক্তা অধিকারকে বলব-শিল্প মন্ত্রণালয়ের যে দায়িত্ব সেটা যেন তাদের জানানো হয়। আমরাও আমাদের ব্যবস্থা নেবে।

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!