কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার পরও নগদ অর্থ সংকটে ভুগছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। অন্যদিকে, সময়মতো ধারের টাকা শোধ করা নিয়েও বিপাকে পড়েছে এক সময়ের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানটি। যার পেছনে সুশাসনের ঘাটতিকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, সংকট কাটাতে সোনালী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা ঋণ নেয় ইসলামী ব্যাংক।
একসময়ের লাভজনক ইসলামী ব্যাংক এখন ধুঁকছে তারল্য সংকটে। গ্রাহকদের ঠিকমতো পাওনা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের কাছ থেকে ধার করে চলছে ব্যাংকটি। বিপত্তি সেখানেও সময়মতো শোধ করতে পারছে না ধারের টাকাও।
তারল্য সংকট কাটাতে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হয়েও সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ১১ শতাংশ সুদের বিনিময়ে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা ঋণ নেয় ব্যাংকটি। যার মধ্যে ৪৯১ কোটি টাকা সীমা অতিরিক্ত ঋণ। এটা স্পষ্টত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার লঙ্ঘন।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সবার চোখের সামনে বসে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে সবাই দেখছে ব্যাংকটি সংকটে ভুগছে। এটাই সত্য, এর বাইরে কিছু নেই।
সোনালী ব্যাংকের তথ্য বলেছে, ক্রেডিট রেটিং ও টলারেবল ক্লাসিফায়েড লোন রেটিংসহ ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা সন্তোষজনক। তাই আন্তঃব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ঋণসীমা ছাড়িয়ে অনুমোদন করা হয় এই ঋণ।
যেখানে স্বল্প সময়ের জন্য এসএনডি খাতে দেয়া ঋণের মধ্যে মুনাফা ও ঋণের ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এই স্বল্পমেয়াদী ঋণের মেয়াদ শেষ হলেও তা পরিশোধ করতে পারেনি ইসলামী ব্যাংক। তাই অবশিষ্ট ঋণের ১ হাজার ৩০ কোটি টাকার মধ্যে ৮৮০ কোটি টাকা ১৩ দিন এবং ১৫০ কোটি টাকা ১৪ দিন মেয়াদে ১১ শতাংশ মুনাফায় নবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করে সোনালী ব্যাংকের ৮৫৮তম বোর্ড সভা।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে এক জায়গায় এত টাকা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার করছে ইসলামী ব্যাংক। স্বাভাবিকভাবেই তারল্য সংকটে ভুগছে প্রতিষ্ঠানটি। সবমিলিয়ে ব্যাংকটির প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে সবার।
বোর্ড বলছে, বকেয়া আদায়ে তাগাদা দিতে হবে ইসলামী ব্যাংককে। এছাড়া সতর্ক থাকতে হবে পরের মেয়াদে ঋণ প্রদানেও। যোগাযোগ করলেও অবশ্য এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সোনালী বা ইসলামী ব্যাংকের কেউই।
খুলনা গেজেট/কেডি