প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা অর্থ আত্মসাৎ মামলায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এড. কে এম ইকবাল হোসেনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক শরীফ হোসেন হায়দার তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, এ মামলার জামিনের জন্য তিনি উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ৬ সপ্তাহের আদেশ জারি করে নিম্ন আদালত থেকে জামিন নেওয়ার কথা জানানো হয়। সে আদেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার তিনি খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য এসেছিলেন। কিন্তু আইনজীবীদের বিরোধীতার কারণে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র আরও জানা যায়, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি সাধারণ সভার মাধ্যমে একজন চেয়ারম্যান এবং খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সদস্য করে একটি বিশেষ কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়।
কল্যাণ তহবিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এড. কাজী বাদশা। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এড. মো. সাইফুল ইসলাম ও এড. কে এম ইকবাল হোসেন।
পাঁচ বছর মেয়াদী একটি তহবিল গঠন করে প্রত্যেক সদস্য’র কাছ থেকে ৩০০ এবং বার ৭০০ টাকা ধার্য করা হয়। এ উদ্দেশ্যে নিয়ে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর চেয়ারম্যান ও দু’সদস্যর স্বাক্ষরে সমিতির রেজুলেশনসহ এস আই বি এল ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও অন্য একজন সদস্য’র স্বাক্ষরে লেনদেন পরিচালিত হবে। ওই একাউন্টে প্রথমিকভাবে টাকা জমা হওয়ার পর পৃথক পৃথকভাবে ৫ টি পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়ী স্কিম খুলে প্রতিমাসে সেখানে নিয়মিত টাকা জমা করা হয়। কিন্তু ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার একবছর ছয়মাস পূর্বে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পরস্পর যোগসাজসে নির্বাহী কমিটির কোন সভা ছাড়াই তাদের স্বাক্ষরে এসআইবিএল ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে ৭৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬০ টাকা আত্মসাত করে। এ ঘটনায় এ বছরের ২৮ আগষ্ট জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য সচিব এড. নুরুল হাসান রুবা বাদী হয়ে দন্ডবিধির- ১৮৬০ এর ৪০৬/৪২০/৩৪ ধারায় খুলনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং ১৬।
মামলায় আসামিরা হলেন, এড. মো. সাইফুল ইসলাম, এড. তারিক মাহমুদ তারা, এড. কে এম ইকবাল হোসেন, এড. কাজী বাদশা মিয়া ও ইসতিয়াক ( এড. সাইফুল ইসলামের ক্যাশিয়ার)।
জেলা পিপি এড. তৌহিদুর রহমান তুষার খুলনা গেজেটকে বলেন, উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে তাকে ৬ সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার তার শেষদিন ছিল। আজ তিনি আদালতে আবেদন করলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
খুলনা গেজেট/এনএম/এএজে