পদ্মা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে আগামী ২৫ জুন। দিনটি বাংলাদের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ঐ দিন সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করবেন। এরপরই যানবাহন চলাচলের জন্য প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মুক্ত হবে।
পদ্মা সেতু নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আশা, আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা পূরণের বিষয় তুলে ধরে খুলনা গেজেটকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রপ্তানী সংশ্লিষ্ট সকল খাতের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংগঠন ‘এক্সপোর্টর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (EAB) এর বর্তমান সভাপতি, বিজিএমইএ’র প্রাক্তন সভাপতি ও খুলনা -৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী।
তিনি বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু হলো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনার শ্রেষ্ঠ উপহার। যা আগামী ২৫ জুন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
প্রথমতঃ পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, সমগ্র বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনবে। পদ্মা সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত সহজতর হবে। সময় এবং অর্থ দুই’ই সাশ্রয়ী হবে। চলাচল সহজ করার পাশাপাশি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সমীক্ষানুযায়ী পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
দ্বিতীয়তঃ পদ্মা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলবে। এ অঞ্চলে প্রচুর বিনিয়োগ বাড়বে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। পণ্য পরিবহণ সহজতর হবে।
তৃতীয়তঃ মোংলা বন্দরে আমদানি রপ্তানি ২’শ থেকে ৩’শ গুণ বেড়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা কম খরচে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে তাদের পণ্য আমদানি রপ্তানি করতে পারবে।
চতুর্থতঃ পদ্মা সেতু শিল্প নগরী হিসেবে খুলনার নামকরণের পরিপূর্ণতা আনায়ন করবে। পূর্বের রুপ ফিরে পাবে শিল্প নগরী খুলনা। ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খুলনাঞ্চলে বিনিয়োগের চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন। এক কথায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে শিল্প নগরী খুলনা।
পঞ্চমতঃ সুন্দরবন ভিত্তিক পর্যটন শিল্প গড়ে উঠবে। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলে দেশী বিদেশী অনেক পর্যটক বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন দেখতে আসবে।
শেষতঃ পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমতে শুরু করবে এবং মোংলা বন্দরে চাপ বাড়তে শুরু করবে। পদ্মা সেতুর প্রভাব রাজধানী ঢাকার উপরও পড়বে। ঢাকা শহরের যানজট হ্রাস পাবে।