উত্তমের সেই ভুবন ভোলানো হাসি, প্রেমিকসুলভ আচার-আচরণ এখনো মানুষের মন মাতায়। বাংলা সিনেমার আইকন হয়ে কোটি হৃদয়ে এখনো বেঁচে আছেন মহানায়ক উত্তম কুমার। আজ ৩ সেপ্টেম্বর তার জন্মদিন।
১৯২৬ সালের আজকের এদিনে কলকাতার ভবানীপুরে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্মেছিলেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। তার আসল নাম ছিল অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। সিনেমায় এসে নিজের নাম পাল্টে রাখেন উত্তম কুমার। শিক্ষাজীবন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানির চাকরি শুরু করেন সংসারের হাল ধরতে। কিন্তু অভিনয়ের পোকাটা থেকেই গিয়েছিল মাথায়।
রূপালি পর্দায় উত্তম কুমারের শুরু ‘মায়াডোর’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। ছবিটি মুক্তি পায়নি।
এরপর প্রথম ছবি হিসেবে ‘দৃষ্টিদান’ ছবিটি মুক্তি পেলেও সেটি আলোচনায় আসেনি। ‘বসু পরিবার’ ছবিটি দিয়ে খানিকটা পরিচিতি আসে। ১৯৫৩ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ঝড় তোলেন উত্তম কুমার। এই ছবির মধ্য দিয়েই বাংলা চলচ্চিত্রে আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান তিনি৷
শুরু হয় উত্তম যুগ। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ আর ‘সাগরিকা’-এর মতো কালজয়ী সব ছবির পরিচিত ও আকাঙ্খিত মুখ হয়ে ওঠে উত্তম।
সুচিত্রা সেনের সঙ্গে তার জুটি ছিলো তুমুল জনপ্রিয়৷ বহু সিনেমায় তারা কালজয়ী হয়ে আছেন। এছাড়াও সুপ্রিয়া দেবী, তনুজাসহ আরও অনেক নায়িকার সঙ্গেই সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি৷
উত্তম কুমার শুধু যে বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তা কিন্তু নয়। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তার অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘ছোটিসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’, ‘আনন্দ আশ্রম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
এরপর সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ -তে উত্তম কুমার নিজেকে তুলে ধরেছেন অনন্যভাবে। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই চিরবিদায় নেয়ার পরও বাংলার মানুষের মনে থেকে গেছেন মহানায়ক হয়েই। যতো দিন বাংলা সিনেমা থাকবে তার নাম থেকে যাবে অমর হয়ে।
খুলনা গেজেট/এনএম