যশোরের অভয়নগরে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ চরমে পৌঁছেছে। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পা রাখার জায়গা নেই। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী। এছাড়া অন্যান্য রোগীর চাপ সারা বছরের মতোই রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে , ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ রোগী ভর্তি থাকছে। ফলে রোগীর চাপ সামলাতে রীতি মত হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সেই সাথে হাসপাতালের পরিবেশ পরিচ্ছনতা বজায় রাখাও অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। আবার তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে স্যালাইনের সংকট ।
ফার্মেসী গুলোতে স্যালাইন ক্রয় করতে দেখা গেছে রোগীর স্বজনদের। কিন্তু চাহিদা মত স্যালাইন মিলছে না। কোন কোন ফার্মেনীতে স্যালাইন মিললেও কিনতে হচ্ছে ৩ গুন দাম দিয়ে। দোকান মালিকদের দাবি, তাদেরকে খুলনা হেরাজ মার্কেট সহ বিভিন্ন পাইকারী মার্কেট থেকে অধিক দামে স্যালাইন কিনে এনে বিক্রয় করতে হচ্ছে। মানবিক কারণে তারা পাইকারী র্মাকেট গুলোতে ছুটে যাচ্ছেন অনেকেই স্যালাইন ম্যানেজ করতে। ১০ টা স্যালাইন চাইলে ২ টা পাচ্ছেন তারা।
এদিকে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে প্রাথমিক করনীয় সর্ম্পকে নেই কোন সচেতনতা মূলক সভা সেমিনার কিংবা স্বাস্থ্য কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ কোন প্রচারণা।
সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালটিতে ১১ জন ব্যক্তি ডেঙ্গু রোগ নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ৪৫জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ নার্সদের ।
হাসপাতালে বেডসহ মেঝেতে ভর্তিকৃত রোগীর জন্য চলাচল করতেও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। গত ১ মাসে হাসপাতালটিতে ২শ ৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত সেপ্টেম্বর মাসেই চিকিৎসা নিয়েছেন ২৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী, আগস্টে ছিল ২শ জন। আর জুলাই মাসে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১শ ৩৩ জন । ধারাবাহিক এ বৃদ্ধির হার অক্টোবরেও অব্যাহত থাকবে বলে আশংঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ দিকে রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে আমাদের স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু রোগী আমিনুর মোল্যা, মনা হোসেন, আলাউদ্দিন হাসান বলেন, ৫ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার দেখানোর পর রক্ত পরিক্ষা করে ডেঙ্গু রোগ সনাক্ত হয়েছে। তারপর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু স্যালাইন কিনতে গিয়ে ৩ গুন দাম দিতে হচ্ছে। তা না হলে মিলছে না স্যালাইন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এ হাসপাতালে অনেক বেশি । আমরা নিয়মিত তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে ৫০ শয্যার হাসপাতালের দিগুন রোগীর সেবা দিতে গিয়ে সার্বিক দিক হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্যালাইন সংকটের ব্যাপারে সতত্যা যাচাই করে জানিয়ে বলেন, তবে এ সংকট দ্রতই সমাধান হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ