ভবদহ অঞ্চলের অভয়নগরে স্বেচ্ছাশ্রমে আমডাঙ্গা খালের পলি ও ব্লক অপসারণের কাজে নেমেছে এলাকাবাসী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় সহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছাশ্রমের কাজ দেখতে যান।
দেখা যায়, অভয়নগর ও মণিরামপুর উপজেলার প্রায় ৮ ইউনিয়নের ২০ গ্রামের পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে খালের মধ্যে পলি ও তলিয়ে যাওয়া ব্লক অপসারণের কাজ করছে। খালের তিন কিলোমিটার অংশে ৩৫টি দলে বিভক্ত হয়ে পলি ও ব্লক অপসারণ করা হচ্ছে। ভৈরব নদের সংযোগস্থলে একটি স্কেভেটর বসিয়ে আবর্জনা, ভেঙ্গেপড়া গাছ ও ব্লক অপসারণ করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা। এসময় সাংসদ রণজিত কুমার রায় খালের পলি ও ব্লক অপসারণের কাজ অব্যাহত রাখার আহবান জানান। তিনি পানিবন্দি মানুষের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত সহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেয়া অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের একটি দল জানায়, প্রায় ৫ মাস ধরে ভবদহ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সরকারি বা বে-সরকারিভাবে দেয়া হয়নি কোন ত্রাণ সহায়তা। শাপলা ও মাছ শিকার করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। কোন উপায় না পেয়ে অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের পলি ও ব্লক অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। কাজ সম্পন্ন হলে খাল পাড়ের ব্লক ও ভাঙ্গন রোধে বাঁশের বল্লি বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রউফ মোল্যা জানান, ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতোমধ্যে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে পানি উন্নয়ন বোর্ড আন্তরিক নয়। তাদের অপরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা ভবদহের জলাবদ্ধতার সমাধান না করে সমস্যা বাড়িয়ে চলেছে। বাধ্য হয়ে আমরা পানিবন্দি বিভিন্ন গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে আমডাঙ্গা খালের সংস্কার কাজ শুরু করেছি। এই খালের সংস্কার কাজ শেষ হলে অভয়নগরের প্রেমবাগ, সুন্দলী, চলিশিয়া, পায়রা ও মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ও মনোহরপুর ইউনিয়নসহ নওয়াপাড়া পৌরসভার ১. ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা থাকবে না। অচিরেই আমরা বোরো ধান ও মাছ চাষ শুরু করতে পারবো। এছাড়া আমডাঙ্গা খাল পাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলোর মধ্যে কোন পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাদের ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনা চলমান আছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন