দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেক কিছুতেই সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে। ক্রীড়াঙ্গনেও বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। সেই হাওয়াতেই আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচন। সভাপতি পদে প্রার্থী তাবিথ আউয়াল এবং এ এফ এম মিজানুর রহমান চৌধুরী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ক্রীড়াঙ্গনে তো বটেই, পুরা দেশে এটাই প্রথম কোনো নির্বাচন। যেখানে ১৩৩ জন কাউন্সিলর আগামী চার বছর দেশের ফুটবলকে পরিচালিত করতে ২১ জনকে নির্বাচিত করবেন। নাটকীয় কিছু না ঘটলে ফেডারেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বাফুফের দু’বারের সাবেক সহসভাপতি তাবিথ আউয়াল। এই পদে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দিনাজপুরের তৃণমূল সংগঠক এ এফ এম মিজানুর রহমান চৌধুরী শুধু কাগজ-কলমেই প্রার্থী। পরিচিতি ও নির্বাচনের প্রচারণায় তাবিথের ধারেকাছেও নেই তিনি। রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাউন্সিলররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ফেডারেশনের পদ আঁকড়ে রাখা ব্যক্তিদের অনেকেই চলে গেছেন আত্মগোপনে। পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন। নির্বাচন না হলেও বিসিবির গঠনতন্ত্র এবং আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন ফারুক আহমেদ। ক্রিকেট বোর্ডের পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেও পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। তবে বাফুফেতে নির্বাচনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্বের দেখা মিলবে। সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন মো. ইমরুল হাসান।
বাফুফে নির্বাচনের আকর্ষণটা সহসভাপতি ও সদস্য পদ নিয়ে। সহসভাপতির চারটি পদের বিপরীতে লড়ছেন ছয়জন। যশোরের শামসুল হুদা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, কে-স্পোর্টসের স্বত্বাধিকারী ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম, সাবেক দুই ফুটবলার মো. শফিকুল ইসলাম মানিক ও সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, লক্ষ্মীপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মো. ওয়াহিদ উদ্দীন চৌধুরী (হ্যাপি) এবং ব্রাদার্স ইউনিয়নের সাব্বির আহম্মেদ আরেফ।
১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে নির্বাচনের ময়দানে আছেন ৩৭ প্রার্থী। এদের মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন চারজন। কাজী সালাউদ্দিনের সময়ে বাফুফে নির্বাহী কমিটিতে থাকা কয়েকজনও এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। পুরোনোদের সঙ্গে বেশকিছু নতুন মুখ দেখা যাবে বাফুফের নির্বাহী কমিটিতে।
নির্বাচনী লড়াই থেকে সালাউদ্দিনের সরে যাওয়ার ঘোষণার সপ্তাহখানের মধ্যেই লাইমলাইটে আসেন বাফুফের দু’বারের সাবেক সহসভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি জয়ের ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া সবাইকে শুভকামনা জানাচ্ছি। ডেলিগেটরাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। যেহেতু নির্বাচনের ব্যাপার, সেহেতু আগাম কিছু বলা যাচ্ছেন না। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী। কাউন্সিলরদের কাছে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচিত হলে, যারাই আসবেন, তাদের সঙ্গে নিয়ে ফুটবলের জন্য কাজ করতে চাই।’ পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতায় নিজেকে এগিয়ে রাখছে সভাপতি প্রার্থী মিজানুর রহমান, ‘পরিকল্পনা আর অভিজ্ঞতায় আমি এগিয়ে আছি। ফুটবলের কারিগর আমি। বাফুফে আর জেলা পর্যায়ের গঠনতন্ত্র সবই মুখস্থ আমার। আমি নিজেও রাজনীতির বাইরে। তাই ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত করতে চাই। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আমি।’
খুলনা গেজেট/এইচ