অবৈধভাবে রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চালু, গ্যাস সিলিন্ডার রাস্তায় রেখে জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ গত দুই দিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮০০ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতে জরিমানা দেওয়ার পর প্রত্যেকে ছাড়া পেয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেস্তোরাঁর ভবনগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা না থাকায় বিভিন্ন রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ডিএমপির রমনা, লালবাগ, ওয়ারী, মতিঝিল, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা বিভাগ মোট ৫৬২টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে। এর মধ্যে হোটেল বা রেস্তোরাঁই ৪৫৫টি। এর বাইরে ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দোকান ১০৪টি এবং তিনটি রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। এসব অভিযানের ঘটনায় মোট ৫টি নিয়মিত মামলা করেছে পুলিশ। আর ২২৯টি ঘটনায় ডিএমপি অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারায় অধর্তব্য মামলা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ এভাবে রেস্তোরাঁর কর্মীদের ধরে নেওয়াকে হয়রানি হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার রুহুল আমিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বেইলি রোডের আগুনের পর বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু ঢালাওভাবে রেস্তোরাঁর কর্মীদের যেভাবে গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, সেটি হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডারসহ দোকানের সরঞ্জাম রাখাসহ ডিএমপি অধ্যাদেশসহ আইনের পরিপন্থী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার আতিয়া রেস্তোরাঁ নামের একটি খাবারের হোটেলে দুই বছর ধরে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার সন্ধ্যার সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার আদালতে আসেন জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আসমা ও মেয়ে আয়েশা। বেলা সাড়ে তিনটার সময় আদালত চত্বরে আসমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে ব্যবসা করতেন আমার স্বামী। এখন হোটেলের ম্যানেজারি করেন। হোটেলের সামনে কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল। এ জন্য পুলিশ আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে আসে।’