বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনাঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই হাতে হাত রেখে একটি সুন্দর সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই। কোনো দুর্বলের ওপর জালিমের অত্যাচার সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের সমাজের সাধারণ মানুষের সম্পদ লুটপাট করতে দেওয়া হবে না। কোর্ট, কাচারি ও আদালতকে দলীয় কার্যালয় বানাতে দেবে না জনগণ।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো বক্তব্য দিতে আসিনি। এসেছি আপনাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়াতে। বন্যাকবলিত মানুষ খাবার, জ্বালানি, বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে। বন্যার পানি থেকে রক্ষায় কোনো কোনো এলাকায় ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও বেড়িবাঁধে অবস্থান করছে। গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষ। পানিতে চারদিক তলিয়ে যাওয়ায় তারা এখন নি:স্ব। এসব এলাকায় স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষকে প্রতিনিয়ত সহযোগীতাতা করা হচ্ছে। অবিলম্বে সরকারকে পানিবন্দী মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী এবং বন্যা পরবর্তী সময় পুনর্বাসন কারার আহব্বান জানান। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) তিনি পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের প্লাবিত হরিণখোলা, ফুলবাড়ি ও দূর্গাপুর গ্রামসহ দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে তাদের মাঝে রান্না করা ও শুকনা খাবার বিতরণকালে এ আহবান জানান।
এ সময় তাঁর সাথে খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি জাহিদুর রহমান নাঈম, জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ওয়ায়েজ কুরুনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা মো. হেজবুল্লাহ, মারুফ হোসেন, খুলনা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আল আমিন গোলদার, দেলুটি ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সেক্রেটারি সেলিম গাজী, ছাত্রশিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি রুহুল আমিন, সাবেক ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান রাসেলসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেকে সুপেয় পানি, খাবার ও ওষুধ সংকটে ভুগছেন। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে পানিবন্দিদের উদ্ধার ও সাধ্যমতো ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছে। বন্যার্ত মানুষের দুঃখ লাঘবে জামায়াতে ইসলামী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার, ভাত, খিচুড়িসহ চিকিৎসা সেবা ঔষধ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির এই সময়ে গরীব ও অসহায় মানুষ জননেতা সকলের প্রিয় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ভাইকে কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, পূর্ণিমার জোয়ারে গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালীনগর বেড়িবাঁধ ভেঙে কালীনগর, দারুল মল্লিক, হরিণখোলা, সৈয়দখালি, সেনেরবেড়, গোপীপাগলা, খেজুরতলা, তেলিখালী, হাটবাড়ী, ফুলবাড়ী, বিগরদানা, দুর্গাপুর ও নোয়াই ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। যাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে চিংড়ি ঘের ও ফসলি জমি।
খুলনা গেজেট/এএজে