খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে
  আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ঋষভ পন্ত

অবিরাম বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগেরহাট

টানা দুই দিনের বৃষ্টি ও পূর্নিমারে জোয়ারে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম। বাদ যায়নি বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা পৌর শহরও। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। বাড়িতে রান্নাও বন্ধ রয়েছে কারও কারও। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত অবিরাম বৃষ্টি ও পূর্নিমার জোয়ারে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে রবিবার দুপুরের জোয়ার থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বনের করমজল, দুবলার চরসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দুই-তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বন্য প্রাণির ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে এই পানিতে বনের কোন প্রাণির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির ।

অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ নিম্ন চাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। কোন কোন ট্রলার গতকাল রাতেই লোকালয়ে ফিরে এসেছে। তবে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলেরা।

বাগেরহাট পৌর শহরের রাহাতের মোড়, সাধনার মোড়, পূর্ব বাসাবাটি, কেবিবাজারেরে পিছনে, পুরাতন বাজার ভূমি অফিসের সামনে, মালোপাড়া, বাগেরহাট মাছ ও কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মাঝিডঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্প, চরগ্রাম, বিষ্ণুপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

কচুয়া উপজেলার ভান্ডারখোলা, নরেন্দ্রপুর, প্রতাপপুর, সাংদিয়া, আফরাসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিত মোরেলগঞ্জের প্রধান বাজার, উপজেলা পরিষদের অফিস চত্বর, তেলিগাতি, হোগলাপাশা, ফুলহাতাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক মানুষ। এছাড়া রামপাল, মোংলা, শরণখোলা উপজেলার বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মালোপাড়া এলাকার মোঃ শহিদ বলেন, প্রতি পূর্নিমা ও আমাবশ্যার জোয়ারে স্লুইজ গেট থেকে পানি এসে আমাদের এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। এসব স্লুইজ গেট নষ্ট থাকায় প্রতিনিয়ত আমাদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া যেসব স্লুইজ গেট বন্ধ থাকা প্রয়োজন। তা খোলা রাখা হয় জোর করে। এর ফলে আমাদের ছাগল, গরু, হাস মুরগি পানিতে ভেসে যায়।

একই এলাকার হাসি বেগম বলেন, এত বেশি পানি উঠেছে, যে আমাদের চুলাও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। রান্নাও করতে পারিন গতকাল রাত থেকে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কিভাবে বাঁচব।

কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের সাব্বির মোল্লা বলেন, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আমাদের এলাকার রাস্তা যেমন ডুবে গেছে। তেমনি আমাদের বাড়ি ঘরেও পানি উঠেছে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের।

সাগর উত্তাল থাকায় লোকালয়ে ফিরে আসা জেলে নয়ন বলেন, রবিবার সকাল থেকেই সাগর উত্তাল ছিল। সময় বৃদ্ধির সাথে সাগর আরও বেশি উত্তাল হতে থাকে। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে বাগেরহাট কেবি বাজার এলাকায় চলে আসি। তবে এযাত্রায় কারও কোন ক্ষতি হয়নি।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পূর্নিমার জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে বেশকিছু এলাকায় পানি উঠেছে। তবে এতে কোন মানুষ বা প্রাণির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এলাকায় খোজ খবর রাখছেন। কারও কোন বিপদ হলে বা খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন হলে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনা গেজেট/এসজেড

 

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!