ইন্দ্রজিৎ সরকার সম্ভু (৩৫) নামের এক পথ ভোলা যুবক অবশেষে ভারতে তার মায়ের কাছে ফিরলো। সে ভারতের নদিয়া জেলার কমলাপুর এলাকার মৃত রজেশ্বর সরকারের ছেলে। তার মায়ের নাম অলোকা ও বোনের নাম মহামায়া।
সে গত ২০০০ সালে পথ ভুলে ভারত থেকে ঘুরতে ঘুরতে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার পৌর বাজারে চলে আসে। বাজারের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে ঘুরতে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে সে। একপর্যায়ে কলারোয়া বাজারের সরকারী কলেজ মোড়ের রণি হোটেলে সে খাদ্য খেতে আসে। টাকা নেই পয়সা নেই সে কিভাবে খাদ্য খাবে। ওই দোকানের মালিকের কাছে খাদ্য চাওয়াতে সে তার নাম ও ঠিকানা জানতে চায়। পরে সে সব খুলে বললে ওই হোটেলের মালিক তাকে তার দোকানের কাজ দেন। আর সেই থেকে সে ওই দোকানের কার্মচারী হিসাবে বিনা পারিশ্রমে কাজ করে যাচ্ছে সে। অসহায় সম্ভু সরকার দীর্ঘ দিন ধরে তার মা ও বোনের কাছে ফিরতে চাইলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসনে নি। এনিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় কয়েকবার ফলাও করে সংবাদও প্রকাশ পায়। সে মাঝে মাঝে হাউ মাউ করে যাকে দেখে তাকে কেঁদে বলে ভাই আমি আমার দেশের বাড়ীতে যেতে চাই। মা ও বোনকে একবারের জন্য দেখতে চাই, আমাকে একটু সাহায্য করবেন।
হঠাৎ গত (২০ ডিসেম্বর) ২০২১ তারিখে কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামকে দেখে ইন্দ্রজিৎ সরকার সম্ভু এগিয়ে এসে বলেন, স্যার আমাকে একটু সাহায্য করেন, আমি আমার ভারতের দেশের বাড়ীতে মা ও বোনের কাছে ফিরতে চাই। তখন উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু তার সব কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগ্নে সাংবাদিক সরদার ইমরানকে জানিয়ে কলারোয়ার কেঁড়াগাছি সীমান্তে সম্ভু সরকারকে নিয়ে যান। সেখানে বাংলাদেশী বিজিবি ও ভারতের বিএসএফকে বিষয়টি অবগতি করে এবং দু’দেশের সহযোগিতায় পথভোলা ইন্দ্রজিৎ সরকার সম্ভুরকে তার মায়ের কাছে তুলে দেয়া হয়। পথভোলা সম্ভু সরকার তার মাকে পেয়ে অনেক খুশি।