ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতে ভাঙা হলো আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির লকার। প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডির অফিসে সোমবার(৩১ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে এই লকার ভাঙার কাজ শুরু হয়।
ইভ্যালির চেয়ারম্যানের কাছে লকারের পাসওয়ার্ড চাইলেও সেটি দেননি। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় উচ্চ আদালতের করে দেয়া অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড লকার ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিকেল ৩টায় পুরো বোর্ডের সদস্য এবং ঢাকা জেলা বিভাগের মনোনীত ম্যাজিস্ট্রেট ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ইভ্যালি অফিসে থাকা দুটি লকার বৈদ্যুতিক চালিত কাটার দিয়ে ভাঙার কাজ শুরু হয়।
ভাঙার কাজ শুরুর আগে পুরো বোর্ডের উপস্থিতিতে সরকার গঠিত ইভ্যালি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইভ্যালির অফিসে দুটি লকারের খোঁজ পেয়েছি। অফিসে উপরতলায় ও নিচের তলায় দুটি লকার রয়েছে। আমরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক সম্পদ অ্যাসেসমেন্ট করছি। সে অনুযায়ী এই লকারে কী রয়েছে তা বের করা দরকার ছিল। ‘সে লক্ষ্যে আদালতের অনুমোদন নিয়ে এই লকারগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। একই সঙ্গে লকার খোলার উদ্দেশ্যে পিনকোড চাইতে আমরা কারাগারে থাকায় বেলের এমডি মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। কিন্তু তিনি আমাদের পাসকোড সরবরাহ করেননি।’
তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে বোর্ডের সর্বসম্মত আলোচনায় লকার দুটি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী দিন তারিখ ঠিক করে জেলা প্রশাসনকে এবং থানা প্রশাসনকে জানিয়ে তাদের মনোনীত সদস্যদের উপস্থিতিতে এখন আমরা লকার ভাঙার কাজ শুরু করেছি। এই লকারের ভেতরে কী আছে তা আমরাও জানি না, আপনারাও জানেন না। আমরা এখন ভাঙার কাজ শুরু করছি, শেষ হলে তা আপনাদের সঙ্গে আমরাও দেখতে পারব।’
পরে লকার কাটার কাজ শুরু করা হয়। লকার ভাঙার পর সেখানে ব্যাংক চেক ও কিছু কাজগপত্র পায় বোর্ড।
সেগুলো লিস্ট করে জব্দ দেখানো হবে। পরে বোর্ড মিটিং করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাবে বলে জানান তিনি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ইভ্যালি পরিচালনায় উচ্চ আদালতের করে দেয়া অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের প্রধান আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পারার অভিযোগ ছিল অনেক দিন ধরে। এসবের মধ্যেই গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এরপর গুলশান থানায় করা অর্থ আত্মসাৎ মামলায় তাদের তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। এই মামলায় রিমান্ড শেষে ধানমন্ডি থানায় করা অর্থ আত্মসাতের অপর এক মামলায় রাসেলকে ফের রিমান্ডে পাঠানো হয়। আসামি দুজনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।