খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

অবশেষে গতি ফিরছে শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণে

আশরাফুল ইসলাম নূর

সরকারি একাধিক দপ্তরের সমন্বয়হীনতা ও অর্থ ছাড় না পাওয়াসহ যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সাত বছর পর গতি ফিরছে শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের। সোমবার (৩১ আগস্ট) খুলনা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন সরেজমিনে গিয়ে সীমানা নির্ধারণ করেছেন। এরআগে জেলা প্রশাসন, কেডিএ, শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষে ত্রিপক্ষীয় সভায় সমন্বয়হীনতা দুর করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন পর গতি ফিরেছে খুলনাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত এ প্রকল্পটিতে। এটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে বিভাগীয় শহর খুলনায় প্রবেশে ৭/৮ কিলোমিটার দুরত্ব ও ব্যাপক যানজট কমবে।

সূত্রমতে, গত ২১ জুলাই খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সভায় প্রধানমন্ত্রী দু’টি প্রকল্পে কাজের সমন্বয়হীনতা দূর করে বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে নির্দেশ দেন তার প্রথমটিই হল ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতাসহ সকল জঠিলতা দূর করে প্রকল্পটি শতভাগ এডিপি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট হবে, এটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

এরআগে, ২০১৩ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত একনেক’র সভায় খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে দুই দশমিক ৮৯৫ হেক্টর বা ৭ দশমিক ১৫ একর জমি অধিগ্রহণের নিমিত্ত অর্থ অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। পরবর্তী বছর ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৭ দশমিক ১৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। খুলনা শিপইয়ার্ডের কিছু জমি সড়ক প্রশস্তকরণের আওতায় চলে আসায় নতুন করে জঠিলতার সৃষ্টি হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, সকল জঠিলতা কাটিয়ে শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর কোন জঠিলতা নেই। খুলনাবাসীর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রকল্পটির সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তিনি জানান, খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ দীর্ঘদিন স্থগিত ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে গত ১৮ আগস্ট খুলনা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এবং খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট তিনটি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলাম। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেডিএ’র নিকট খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃক বর্ণিত এক দশমিক ১৭৫০ একর জমি হস্তান্তর করবে মর্মে ২০ আগস্ট জেলা প্রশাসন এবং খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের মধ্যে একরারনামা (চুক্তি) স্বাক্ষরিত হয়।

জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি আরও জানান, একরারনামার শর্ত মোতাবেক জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপ-পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মোছাঃ শাহানাজ পারভীন সোমবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় সরেজমিনে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে শিপইয়ার্ড লিমিটেডের এক দশমিক ১৭৫০ একর জমির সীমানা চিহ্নিত করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুকুলে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। ফলে খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটির দীর্ঘ বিরতির পর বাস্তবায়ন কার্যক্রম ফের শুরু হচ্ছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০১৩ সালের ৭ মে একনেকে প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ৯৮ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। মেয়াদ শেষের আরও চার বছর অতিবাহিত হয়েছে। প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ১২৬ কোটি টাকা করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরও প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর জন্য প্রকল্প সংশোধন করা হয়।
কেডিএ’র সূত্র জানান, রূপসা নদীর তীরকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে ৩ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। সড়কের দুই পাশে হাঁটা-চলার জন্য প্রশস্ত ফুটপাত, মাঝখানে দশমিক ৯২ মিটার রোড ডিভাইডারে ফুলের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। মূল রাস্তা, রোড ডিভাইডার, ড্রেন ও ফুটপাত মিলিয়ে সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া হবে। সড়কটির নকশাও চুড়ান্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তাবিত সড়কটি নির্মাণে বর্তমান সড়কের দু’পাশের ২ দশমিক ৮৯ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!