অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, অত:পর মাদ্রাসাছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার একটি ক্লাব থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আবুল হোসেন আপন (৪০) আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের কন্ডা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে এবং থানা যুবলীগের সদস্য।
থানা পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাতে লালমনিরহাট জেলার সদর থানার কাজী কলোনি গ্রামের মিছির আলীর ছেলে সবুজ হোসেন (১৪) ও তার বন্ধু জাহিদুল ইসলাম (১৫) রাগ করে বাড়ি থেকে আশুলিয়ায় বোনের বাড়ির উদ্দেশে আসে। কিন্তু বাসা খুঁজে না পেয়ে রাতে তারা শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকে। ওখান থেকে স্থানীয় একটি চক্র তাদেরকে অপহরণ করে পরিবারের সদস্যদের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একপর্যায়ে ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া মাদ্রাসাছাত্র সবুজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে একটি ভ্যানে করে হাসপাতালে উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয় অপহরণকারীরা।
কিন্তু রাস্তায় সবুজ মারা গেলে ওই ভ্যানচালক গাড়িসহ তাদেরকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার একটি ক্লাব থেকে যুবলীগ নেতা আবুল হোসেন আপনকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয়রা জানায়, গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা আবুল হোসেন আপন, তার দুই ভাই জাকির মন্ডল ও বাবুলের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীরা। তাদের নামে আশুলিয়া ও আশপাশের বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্য কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, গুলি করে মানুষ হত্যা, চাঁদাবাজি, নির্যাতনসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কে চলাচলকারী যানবাহন থেকে চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপকর্ম জাকির বাহিনীর লোকজন পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতেও সাহস পায়না। স্থানীয় হিন্দু পরিবারের নারী সদস্যদের উপর নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে এই বাহিনীর অপর সদস্যে আকিজুর মন্ডল ও নাজমুলের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার এসআই সুদীপ কুমার গোপ বলেন, মুক্তিপণের দাবিতে সবুজ নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আবুল হোসেন আপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত আছে।
খুলনা গেজেট/এমবিএইচ