সেনা অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির বিচার কাজ শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। গত নির্বাচনে প্রচারকালে করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগে আজ সু চির বিচার হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে।
৭৫ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে প্রথম এই মামলার বিচার কাজ জুলাইয়ের শেষ নাগাদ চলতে পারে বলে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দাবি, ক্ষমতায় থাকাকালে অং সান সু চি ঘুষ হিসেবে ইয়াঙ্গুনের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ছয় লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ ও ১১ কেজি ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ নিয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এর আগে জানায়, দাতব্য সংস্থা দাউ খিন কিই ফাউন্ডেশনের সভাপতি থাকাকালে সু চি জমির অপব্যবহার সম্পর্কিত অভিযোগের পাশাপাশি ঘুষ হিসেবে অর্থ ও স্বর্ণ গ্রহণ করেছিলেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সু চির বিরুদ্ধে মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে একটি অবৈধভাবে ওয়াকিটকি কেনা। ওই সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে দলের অন্য নেতাদেরও আটক ও গৃহবন্দি করে রাখা হয়।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে অন্তত ৮৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি)।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অং সান সু চির বিরুদ্ধে যে বিচার হচ্ছে তা অবান্তর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এই মামলা প্রত্যাহার করা দরকার।’ অং সান সু চির মুক্তি দাবি করেন ফিল রবার্টসন।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিচেল ব্যাচেলেট গত শুক্রবার বলেন, ‘দিন দিন মিয়ানমারে সংঘাত ঘনীভূত হচ্ছে।’ মিয়ানমারের জনগণের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীকে ভারি অস্ত্র ব্যবহার থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান মিচেল ব্যাচেলেট।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার সেনা সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তর।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শুরু থেকেই বলে আসছে, ভোটার জালিয়াতির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন অং সান সু চির দল এনএলডি।
খুলনা গেজেট/এনএম