বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক করার পর সরকারদলীয় একজন সংসদ সদস্যের স্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাঁর মেয়েকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওই পরীক্ষার্থীর নাম উম্মে হামিদা। তিনি বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমানের স্ত্রী শিল্পী বেগমের আগের সংসারের মেয়ে।
গত শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে বগুড়ার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আটক ১৯ জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরপর তাঁদের জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উম্মে হামিদাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সম্পর্কে জেলা ডিবির পরিদর্শক মোস্তাফিজ হাসান বলেন, আটক ১৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উম্মে হামিদাকে জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য ১৮ জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তবে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা ইয়াসমিন বলেন, প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ মোট ২৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রশ্নসহ ডিভাইস পাওয়ায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর জন্য পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বগুড়ার সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ উম্মে হামিদা ও অন্য তিনজনকে আটক করা হয়। ওই চারজনসহ অন্য কেন্দ্র থেকে আটক ১৯ পরীক্ষার্থীকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তখন ডিবি কার্যালয়ে যান সংসদ সদস্য মজিবর রহমানের স্ত্রী শিল্পী বেগম। রাত ১০টার পর হামিদাকে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্য ১৮ পরীক্ষার্থীকে নিয়মিত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
উম্মে হামিদার মা শিল্পী বেগম বলেন, ‘পুলিশ না বুঝেই আমার মেয়েকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়েছিল। পরে ভুল বুঝতে পেরে ছেড়েও দিয়েছে।’
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য মজিবর রহমান বলেন, ‘ উম্মে হামিদা আমার স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়ে। নিয়োগ পরীক্ষায় তার আটক হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’