পাটকেলঘাটার খলিশখালীতে ঠিকাদারের গাফিলতিতে রাস্তা নির্মাণের কাজ ১২ বছর ধরে ঝুলে আছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চোমর খালী, জুজখোলা ৫০০০ গ্রামবাসী। কর্দমাক্ত রাস্তায় চলাচল করতে না পেরে তিক্ত হয়ে ঠিকাদার প্রতিনিধিকে পিটিয়েছেন গ্রামবাসী, তবুও কাজ শেষ করছে না ঠিকাদার।
এনায়েতপুর গ্রামে একটি মাদ্রাসা ও একটি প্রাইমারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। প্রতিদিন সকালে কোমলমতি শিশুরা কর্দমাক্ত রাস্তায় কাদা মেখে বিরক্ত হয়ে স্কুলে যায়। প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এই প্রতিনিধিকে জানান এনায়েতপুরের সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হলেই আমরা বেঁচে যাই। তিনি আরো জানান গত দুই বছর ধরে আমরা খুবই ভোগান্তেতি আছি। আমাদের কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যাওয়া-আসার পথে অনেকে রাস্তায় পড়ে জামা-কাপড় নষ্ট করে ফেলে। এটি এনায়েতপুর স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
তালা উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে “খুলনা, বাগেরহাট,সাতক্ষীরা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক ” প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খলিশখালী হাসপাতাল টু এনায়েতপুর ১৪৩০ মিটার পিচের রাস্তা নির্মাণের কাজ পায় সাতক্ষীরার এলজিইডি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জয় মা ট্রেডার্স। যার প্যাকেজ নম্বর KBS-RIDP/sat/VR-100.2/2023-24(id- no891251) প্রাক্কলিত মূল্য ১, ৪৩, ৮২, ০৩১ (এক কোটি তেতাল্লিশ লক্ষ বিরাশি হাজার একত্রিশ) টাকা ও চুক্তি মূল্য ১, ৩৬, ৬২, ৯২৯ (এক কোটি ছত্রিশ লক্ষ বাষট্টি হাজার নয়শত ঊনত্রিশ) টাকা যা ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখে শুরু করে ১২ নভেম্বের ২০২৪ তারিখে শেষ করার কথা থাকলেও অদ্যবধি কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। প্রকল্পের সময় শেষ হলেও ঠিকাদার ঢাকা থেকে সময় বাড়ানোর আবেদন করে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ১ম চলতি বিল তুলে নেন ৫২, ৯৪, ৬৫৯ (বায়ান্ন লক্ষ চুরানব্বই হাজার ছয়শত ঊনষাট) টাকা।
দুই বছর ধরে কাজ শেষ না করায় উপায়ান্তর না পেয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজের টেন্ডার বাতিল করার সুপারিশ করে সাতক্ষীরা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দেয় উপজেলা প্রকৌশলী লথীন্দ্রনাথ হালদার। তবুও গুরুত্ব দেননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লিপি ঘোষ। এনায়েতপুরের রাস্তা কবে শেষ করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিবেদককে তিনি দম্ভের সাথে জানান, ‘আমার কাজ যখন খুশি আমি করবো আপনাকে জানাতে হবে কেন?’
কর্দমাক্ত রাস্তায় এলাকাবাসীর চলাচলের অসুবিধা ও ভোগান্তি প্রসঙ্গে অবহিত করলে তালা উপজেলা প্রকৌশলী লথীন্দ্রনাথ হালদার জানান, আমি ঠিকাদারের টেন্ডার বাতিল করার সুপারিশ করেও ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ শেষ করাতে পারছি না।
খুলনা গেজেট/এসএস