ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী বাঙালি ও বাঙালি শ্রমিকদের উপর নির্যাতন ও হেনস্হার বিরুদ্ধে কলকাতায় বাম দলগুলির মহামিছিলের জেরে বুধবার (২৩ জুলাই) কলকাতার রাজপথ কার্যত কেঁপে উঠল।
এদিনের মিছিল কার্যত জনজোয়ার ও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এদিন কলকাতার এই মিছিল বুঝিয়ে দিয়েছে কোনোরকম ধর্মীয় বা ভাষাভিত্তিক বিভাজন বামদলগুলি মোটেই বরদাস্ত করবে না এদিনের মিছিল কলকাতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে লেনিন সরণি, চাদনিচক, রাজা সুবোধমল্লিক স্কোয়ার, তালতলা ও মৌলালি মোড় হয়ে মৌলালি রামলীলা পার্কে এসে শেষ হয়।
মিছিলে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুসহ সিপিআই, সিপিআই(এম), সিপিআই(এম এল) লিবারেশন, আর এসপি, ফরোয়ার্ড ব্লক, মার্ক্সবাদী ফরোয়ার্ড ব্লক, আর সিপিআই, বলশেভিক পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ পা মেলান। এদিনে মিছিলের শুরুতেই ভাষণ দেন সিপিআই(এম) রাজ্যসম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, ফরোয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, আর এসপির রাজ্যের সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় ও সিপিআই(এম এল) লিবারেশনের নেতা অতনু চক্রবর্তী সহ বামনেতৃবৃন্দ।
বাম নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি বিশাল গণ-আন্দোলনের ডাক দেন। স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর আমাদেরকে বিজেপি-আর এস এসের ধর্মীয় বিভাজন ও ভাষাভিত্তিক বিভাজনের বিরুদ্ধে আজ মিছিলে নামতে হচ্ছে । এটা আমাদের কাছে লজ্জার বিষয়। স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরে একজন ভারতীয় নাগরিকের কাছে ভোটার আইডি, আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা রেশন কার্ড থাকলেও তাকে নাগরিকত্ব বা ভোটারের পরিচয় দিতে হচ্ছে।
বিজেপি-আর এস এসের কর্পোরেট পুঁজি আজ নাগরিককে নাগরিকহীন ও ভোটারকে ভোটারহীন করার ষড়যন্ত্র করছে। একটা বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে অনুপ্রবেশকারী সাজানো হচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বাইরের রাজ্যের কোনো বাঙালি শ্রমিক ও পেশাজীবী বাংলায় কথা বললে তাকে বাংলাদেশী চিহ্নিত করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। অথবা বাংলাদেশে পুশ করা হচ্ছে। বিজেপি-আর এস এসের এই জঘন্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে মানুষ গণ-আন্দোলনে নামুন। বামদলগুলির ডাকা এদিনের মহামিছিলে ছাত্র-যুব-মহিলা-শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুরদের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো।
খুলনা গেজেট/এএজে