Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বুধবার । ২৩শে জুলাই, ২০২৫ । ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার চরম প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি ইরানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ অভিযানে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। সোমবার (২৩ জুন) সকালে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল আবদুর রহিম মুসাভি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের স্বার্থে আঘাত হানতে ইসলামের যোদ্ধাদের সামনে বাধা রইল না।’

ইরানের প্রতিরোধ অভিযানের মুখপাত্র ইব্রাহিম জোলফাঘারি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জুয়াড়ি ট্রাম্প, যুদ্ধ শুরু করতে পারো, কিন্তু শেষটা আমাদের হাতে।’

তিনি আরও বলেন, মৃতপ্রায় ইসরায়েলকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের আরও বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

ইরানের দাবি, আজ ভোরে ডজনখানেক ‘একমুখী’ ড্রোন ছোড়া হয়, যেগুলোর বেশির ভাগ সফলভাবে ইসরায়েলের ভেতরে আঘাত হানে। আশদোদ ও লাশিশ অঞ্চলে বিস্ফোরণ ঘটে, বেজে ওঠে সতর্কতা সাইরেন।

এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একটি পুরোনো ভিডিওবার্তা প্রকাশ করে তাঁর কার্যালয় জানায়, ‘ইসরায়েলকে শাস্তি পেতেই হবে এবং এখনই সেই শাস্তি শুরু হয়েছে।’

জবাবে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালায়। তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়, তেহরানসহ অন্তত ছয়টি শহরের বিমানবন্দর, ভূগর্ভস্থ বাংকার, জ্বালানি ট্যাংকার ও ইরানি যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। রাজধানী তেহরান ও আশপাশের কারাজ শহরে বিমান হামলায় শহরের বিভিন্ন স্থানে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়।

একই সঙ্গে বোমা পড়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্প্রচার ভবনে, এভিন কারাগারের প্রবেশপথে, রেড ক্রিসেন্ট ভবনে ও শাহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে, যাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক।

ইসরায়েল বলছে, ইরানি হামলায় তাদের ২৪ জন নিহত হয়েছে।

এদিকে ইরান হুমকি দিয়েছে, শুধু ইসরায়েল নয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোও এখন টার্গেট। একই সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধচুক্তি (এনপিটি) থেকে সরে আসা ও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

ইরানের মিত্র হুতি গোষ্ঠী জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়িত থাকলে তারা পুনরায় সমুদ্রপথে হামলা শুরু করবে। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতিসংঘে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বৈঠক করে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য এখন ভয়ানক যুদ্ধাবস্থার মুখোমুখি- এখনই এই আগুন থামাতে হবে।’

আইএইএর বোর্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও এই সংকট নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন।

ইরানি পত্রিকাগুলোতে ছিল তীব্র প্রতিক্রিয়া—

কায়হান: ‘খাইবার শিকানে জ্বলছে ইসরায়েল’

হাম-মিহান: ‘ট্রাম্প এখন কূটনীতির মুখোশে দানব’

শরঘ: ‘হ্যালো ওয়ার্ল্ড, আমরা আছি’— বেসামরিক প্রাণহানির বার্তা নিয়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ হামলার পরিণতি নিয়ে গোটা অঞ্চল এখন ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে। আর তেহরান জানিয়েছে, ‘এ লড়াই যত দিন লাগুক, আমরা শেষ অবধি লড়ব।’

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন