Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ২৪শে জুলাই, ২০২৫ । ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

ঈদের দিনেও গাজায় হামলা ইসরায়েলের, নিহত ৪২

আন্তর্জা‌তিক ডেস্ক

পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এবং এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪২ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।

মধ্যপাচ্য অঞ্চলে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে গত ৬ জানুয়ারি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৬ জানুয়ারি শুক্রবার দিনভর গাজার বিভিন্ন এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সারা দিনে গাজার দক্ষিনাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ১৬ জনের, উত্তর গাজার আল শিফা হাসাপাতালে ১৬ জনের, মধ্য গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির আল আহলি ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালের হাসপাতালে ৫ জনের এবং দেইর এল বালাহ- এলাকার আল আকসা হাসপাতালে ৫ জনের মরদেহ পৌঁছেছে।

এছাড়া ধ্বংস্তূপের তলায় আরও কয়েক জনের মরদেহ আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনও সেসব উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গাজার দেইর আল বালাহ এলাকার বাসিন্দা এবং আলজাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আজুম বলেন, “বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা ঈদুল আজহাকে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করে; কিন্তু গাজায় ঈদ এই রূপেই আসে। প্রতিটি ঈদ গাজার বাসিন্দাদের গভীরভাবে স্মরণ করিয়ে দেয় যে তারা কী হারিয়েছে।”

ঈদের দিন ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজায় যে ৪২ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও আছেন। গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, সর্বশেষ জনকে নিয়ে গাজায় গত দেড় বছরে নিহত সংবাদিকদের সংখ্যা পৌঁছেছে ২২৬ জনে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের এ হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তারপর গত ১৭ মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জন। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালানোর পাশাপাশি গত মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণবাহী গাড়িও প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং খাদ্য, সুপেয় পানি, ও ওষুধের অভাবে নরকের জীবনযাপন করছেন গাজার ফিলিস্তিনিরা।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

এদিকে সম্প্রতি গাজায় ফের দু’মাসের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা হাজির করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই প্রস্তাবনায় নেতানিয়াহু সম্মতি দিলেও হামাস এখন অনুমোদন করেনি।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন