Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
মঙ্গলবার । ২২শে জুলাই, ২০২৫ । ৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

শারীরিক অসুস্থতার কারণেই হোঁচট খেতে হয়েছে: আলিফ আলাউদ্দিন

বিনোদন ডেস্ক

আলিফ আলাউদ্দিন। কণ্ঠশিল্পী ও উপস্থাপিকা। বিরতি ভেঙে গানের ভুবনে আবারও ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন তিনি। আয়োজন করছেন নতুন একক অ্যালবামের। এ সময়ের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর কথা হয় গণমাধ্যমের সঙ্গে

গানের ভুবনে নতুন করে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। অনেক দিন পর একক অ্যালবাম প্রকাশ করতে যাচ্ছেন শুনলাম?

ঠিকই শুনেছেন, পুরোদমে অ্যালবামের কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরই মধ্যে বেশ কিছু গানের কথা লেখা হয়েছে। সেগুলোর সুর ও সংগীতায়োজন নিয়ে ব্যস্ত। কোনো তাড়াহুড়ো নেই, একটু সময় নিয়েই অ্যালবামটি তৈরি করতে চাই। তাছাড়া সময়ের সঙ্গে শ্রোতার চাহিদা বদলেছে। এজন্য তাদের ভালো লাগা মন্দ লাগার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ ছাড়াও নিজের শিল্পী সত্তাকে খুশি করতে আনকোরা নতুন কিছু তুলে ধরতে চাই। তাই গীতিকথা নির্বাচন থেকে শুরু করে গায়কী এবং সুর-সংগীত নিয়ে নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছি।

অনেকে যখন একক গানের প্রকাশনায় ব্যস্ত, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে অ্যালবাম করার ভাবনা এলো কীভাবে?

একক গান এই সময়ের ট্রেন্ড হলেও কেউ কেউ ঠিকই অ্যালবাম তৈরিতে আগ্রহী। আমিও সেসব শিল্পী, মিউজিশিয়ানদের দলে, যারা সবসময় অ্যালবাম প্রকাশের পক্ষে ছিলেন। অ্যালবাম মানেই বিভিন্ন ধরনের গানের সমাহার। যার মাধ্যমে একেক জনের একেক রকম গানের প্রত্যাশা পূরণের সুযোগ থাকে। সময়ের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে নিরীক্ষাধর্মী কাজ তুলে যায় অ্যালবামের মাধ্যমেই। সেই ভাবনা থেকেই একক গানের বদলে অ্যালবাম তৈরি করছি।

পরিচিতি, জনপ্রিয়তা থাকার পরও সমসাময়িকদের চেয়ে আপনার অ্যালবাম ও গানের সংখ্যা কম, এর কারণ কী?

শ্রোতাদের প্রত্যাশ পূরণ কিংবা মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার জন্য অসংখ্য গান গাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তাই সমসাময়িক শিল্পীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একের পর এক গান গাওয়া, অ্যালবাম প্রকাশ করে যাওয়ার ইচ্ছা সেভাবে ছিল না। নব্বই দশকের শেষ প্রান্তে যখন ‘ইস্টিশনের রেলগাড়িটা’ গানটি নতুন করে গেয়েছিলাম, তখনই একটা পরিচিতি দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর যখন প্রথম একক অ্যালবাম এলো, তখনও দারুণভাবে শ্রোতাদের সাড়া পেয়েছি। সেটা এমন এক সময় ছিল যে, চাইলেই অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একের পর এক অ্যালবাম করে যেতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি। আমার বয়স কম ছিল, ভবিষ্যৎ গড়তে পড়ালেখার পর্বটা শেষ করা ছিল জরুরি। তারকাখ্যাতির মোহে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ভবিষ্যতের পথটা মসৃণ করতে চেয়েছি। সংগীত বলয়ে আমার বেড়ে ওঠা বলেই নিজের ওপর বিশ্বাস হারায়নি। শিল্পীজীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারলে, আগামীতেও সাফল্য ধরা দেবে– এই বিশ্বাস নিয়ে পথ চলেছি।

পরিকল্পনামাফিক পথচলা শুরু করেও হোঁচট খেতে হলো কেন?

শারীরিক অসুস্থতার কারণেই হোঁচট খেতে হয়েছে। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে চাকরি শুরু করেছিলাম। গানের ভুবনেও নতুন করে যাত্রা শুরু হয়েছিল। এককভাবে গান গাওয়ার পাশাপাশি ব্যান্ড পেন্টাগনের সঙ্গে পারফর্ম করে যাচ্ছিলাম। উপস্থাপক হিসেবেও গড়ে উঠেছিল আলাদা এক পরিচিতি। বিয়ে, সংসার ধর্ম পালন সবই ঠিকভাবে চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে। সমস্যাও ছিল জটিল। নরমালভাবে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা যাচ্ছিল না। যে কারণে গত কয়েক বছর কঠিন সময় পার করেছি। আমি ভাগ্যবান যে, এই দুঃসময়ে আমার স্বামী কাজী ফায়সাল আহমেদসহ পরিবারের সবাইকে পাশে পেয়েছি। তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা মনে এই বিশ্বাস এনে দিয়েছিল যে, কোনোভাবেই তারা আমাকে হেরে যেতে দেবে না। হয়তো সে কারণেই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করে সুস্থ হয়ে উঠতে পেরেছি। আবার ফিরতে পেরেছি গানের ভুবনে।

সংগীতের এই নতুন যাত্রায় অনেকে খুশি– এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভক্তদের জন্য নিয়মিত গানের আয়োজন করে যাবেন– এখন নিশ্চয় এই আশা করা হয়? 

কথা দিতে পারি, আমার দিক থেকে চেষ্টা কোনো ত্রুটি থাকবে না। যখনই সময় সুযোগ হবে, শ্রোতাদের কাছে নতুন কিছু তুলে ধরব। এই যেমন একক অ্যালবামের কাজ শুরু করেছি, একই ভাবে ব্যান্ড পেন্টাগনের সঙ্গে পারফর্ম করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ৭১ টেলিভিশন ছেড়েও আশার পর মুক্ত ভাবে উপস্থাপনা করে যাওয়ারও পরিকল্পনা আছে। আরও অনেক কিছু করতে চাই, যদি সময় ও পরিস্থিতি অনুক‚লে থাকে। কারণ আমার অনুরাগীদের কোনোভাবেই নিরাশ করতে চাই না।

খুলনা গেজেট/এসএস




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন