গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারের অভিযোগ তুলেছেন উপ-উপাচার্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত পথসভাকে ঘিরে বুধবার গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করে। এতে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসেও একধরনের চাপা উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।
শহরে শিক্ষার্থীদের অনেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে হামলার শিকার হন, কেউ কেউ আটকা পড়েন সংঘর্ষ চলাকালে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে প্রশাসন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে নিজ নিজ বাসার উদ্দেশ্যে চলে যান বিভিন্ন শিক্ষকবৃন্দ। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান নিজ দায়িত্ব পালন না করে গোপনে শিক্ষকদের বাসে খুলনা চলে গেছেন।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে মুখ খোলেন অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের গ্রুপে উপ-উপাচার্য এসব অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রত্যাখ্যান করে নিজ ফেসবুক একাউন্ট থেকে লিখেন, আমি প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনে সবসময় পাশে থেকেছি ও সহযোগিতা করেছি। গতকাল গোপালগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। কারফিউ চলমান থাকায় আমি খুলনা থেকে ট্রেনে করে পরিবারের কাছে রাজশাহী চলে আসি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারও একইভাবে নিজ নিজ বাসভবনে চলে গেছেন। ”
এদিকে উপ-উপাচার্যকে নিয়ে মিথ্যাচারের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি দূর্জয় শুভ এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এমন অপ-প্রচার চলতেই থাকবে।
ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এমন হেয় প্রতিপন্ন করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ধরনের লেখার জন্যই শিক্ষার্থীরা বলির পাঠা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, স্যারকে নিয়ে এমন মিথ্যা, বানোয়াট গুজব প্রচার করার তীব্র নিন্দা জানাই।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রতিবাদে সরব হয়েছেন শিক্ষক – কর্মকর্তাবৃন্দও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আসিফ খালেদ বলেন , শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে এমন কোন কথা বলা উচিত নয় যেটা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা চৌধুরী মনিরুল ইসলাম ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, কিছু মানুষের চরিত্র কখনোই পরিবর্তন হবে না। এ ঘটনার নিন্দা জানাই।
আইসিটি সেলের কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে ছাত্রদের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করার জন্য এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত ডাহা মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসান বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় আমি বাসায় চলে আসি। এরপরও এ ধরনের মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে আমার মানহানি করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে