পবিত্র রমজানের বহুবিদ তাৎপর্যের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটি হল দোয়া। দোয়ার সাথে এ মাসের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াত হতে ১৮৭ নং পর্যন্ত এই ৫ আয়াতে রমজান মাস সংক্রান্ত বিধিবিধান আলোচিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ১৮৬ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, (হে নবী সা.) যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে আপনার নিকট জানতে চায় (বলুন) আমি দোয়াকারীর দোয়ার প্রতিত্তোর দেই যখন সে আমাকে ডাকে।
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা দোয়াকারীর দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যেহেতু রমজান সংশ্লিষ্ট আলোচনার ধারাবাহিকতায় এই আয়াত সুতরাং রমজানের দিনগুলিতে দোয়ার গুরুত্বের বিষয়টি এখানে স্পষ্ট।
এছাড়া সহীহ হাদীসের বর্ণনা মতে তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত দেওয়া হয়না। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার মাঝে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকে না। প্রথমত: ন্যায় বিচারক বাদশার দোয়া। দ্বিতীয়ত: রোজাদারের দোয়া যতক্ষণ না সে ইফতার করে। তৃতীয়ত: মজলুম বা নিপীড়িত ব্যক্তির দোয়া।
হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে রোজাদারের দোয়া মেঘের উপর উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং মহান আল্লাহ নিজের ইজ্জতের শপথ করে বলেন, অবশ্যই আমি তোমার দোয়া কবুল করবো যদিও কিছুটা বিলম্বে হয়। (ইবনে মাজাহ- ১৭৫২)
এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, দোয়ার বাহ্যিক কোন প্রতিফলন তাৎক্ষনিক দৃশ্যমান না হলে হতাশ হতে নেই। কারণ আমার কাঙ্খিত বা দোয়াকৃত বিষয়টি আমার জন্য হিতকর নাও তো হতে পারে। কেননা মানুষতো ভবিষ্যত সম্পর্কে অবগত নয়। সেহেতু মহান আল্লাহ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে তোমরা নিজেদের জন্য এমন বিষয় কামনা কর যাতে তোমাদের অনিষ্ঠ রয়েছে। (বাকারা-২১৬)
রসুলুল্লাহ সা. বলেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া যে কোন মুসলমান আল্লাহর কাছে দোয়া করলে সে তিনটি বিষয়ের যে কোন একটি অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। হয়তো সে তার কাঙ্খিত বস্তু তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাবে। অথবা তার উপর আপতত কোন বিপদ যা তার জন্য পূর্বনির্ধারিত ছিল দোয়ার বরকতে তাকে তা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হবে। নতুবা তার দোয়া আখেরাতের সঞ্চয় হিসাবে গচ্ছিত থাকবে।
তবে এক্ষেত্রে পবিত্র রমজানের বিশেষ বৈশিষ্ট হলো যা মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, প্রত্যেক রোজাদারের জন্য রমাজনের প্রতিদিন একটি দোয়া অবশ্যই কবুল হবে মর্মে নির্ধারিত থাকে।
(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )