এক জঙ্গলে বাস করত শিয়াল ও তার বউ। সে খুবই চালাক কিন্তু সবাই তাকে শিয়াল পন্ডিত বলত। পাশে ছিল একটি নদী। নদীতে বাস করত কুমির। একটি কুমিরের সাতটি বাচ্ছা ছিল। মনে মনে ভাবল এদেরকে লেখাপড়া শিখাবে। কুমির একদিন সাতটি বাচ্ছা নিয়ে শিয়াল পন্ডিতের বাড়িতে এলো।
: পন্ডিত মশাই বাড়িতে আছেন।
: জী আছি, আসুন, বসুন। তা কি মনে করে।
: আমার সাতটি বাচ্ছাকে লেখাপড়া শিখাতে চাই।
: এ কোন ব্যাপারই না। রেখে যান।
কুমির সরল বিশ্বাসে তার বাচ্ছা গুলোকে রেখে আনন্দ চিত্তে নদীতে চলে গেল।
শিয়াল পন্ডিত সাতটি বাচ্ছকে নিয়ে পড়তে বসল।
: আনা, খানা কেমন লাগে কুমিরের ছানা।
এই কথা বলে একটি বাচ্ছা খেয়ে ফেললো।
পরদিন কুমির এলো বাচ্ছাদের দেখার জন্য।
: পন্ডিত মশাই বাড়ি আছেন।
: জী আছি আসেন।
: আমার বাচ্ছারা কেমন আছে।
: খুব ভালো আছে।
: পড়াশুনা কেমন চলছে।
: খুব ভালো।
: ওদের দেখান।
শিয়াল ছয়টিকে সাতবার দেখালো। কুমির খুবই আনন্দ মনে নদীতে চলে গেল। শিয়াল একে একে সবগুলি বাচ্ছা খেয়ে ফেললো। কুমির এসে একদিন শিয়ালকে ডাকল সাড়া না পেয়ে ভেতরে ঢুকল। ভিতরে গিয়ে দেখে শিয়াল তো নেই। দেখতে পায় শুধুই হাড়। কাঁদতে কাঁদতে নদীতে চলে গেল। কুমির প্রতিশোধ নেয়ার ফন্দি আটতে থাকে। একদিন শিয়াল তার বউ নিয়ে ছোট একটি নদী পার হচ্ছিল। কুমির দেখতে পেয়ে খুব দ্রুত এসে শিয়ালের পা ধরল। চালাক শিয়াল বললো,
: দেখতো আমার লাঠিটা কে ধরল।
কুমির মনে মনে ভাবল। ভুল করেছি। ঠিক আছে পা ধরব। ছেড়ে দিয়েছে যেই এক ফাল দিয়ে সে উপরে উঠে গেল। কুমির হায়! হায়! করতে থাকল। শিয়াল বউ নিয়ে দ্রুত সরে পড়ল।
একদিন শিয়াল তার বউ নিয়ে নদীর পাশ দিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ও বললো,
: ঐ দেখ একটি কুমির মরে পড়ে আছে। চল গিয়ে খাই।
শিয়াল বুঝতে পারল তাকে ধরার জন্য মরার মত পড়ে আছে। মরা মনে করে খেতে গেলেই ধরবে।
: এতো মরা খাই না।
এ কথা বলতেই কুমির লেজ নাড়ালো।
: ঐ দেখ জীবিত কুমির। আমরা গেলেই আমাদের ধরে খাবে। চল আমরা সরে পড়ি।
কুমির শিয়ালের কথা শুনল। এক বুক দুঃখ নিয়ে নদীতে চলে গেল।
খুলনা গেজেট/কেএম