এবারের কোরবানির ঈদে বাগেরহাটের সেরা দুই গরু বড় মিয়া ও কালু। ৪০ মণ ওজনের এ গরু দুটির দাম ১৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছেন খামারি মো. মোহন হাওলাদার। ব্যবসায়ীরা দামও বলা শুরু করেছেন। খামারির দাবি আড়াই বছর বয়সের বড় মিয়া ও দুই বছর বয়সের কালুই জেলার সেরা গরু। করোনা পরিস্থিতিতে গরুর সৌন্দর্য্য, ওজন ও রংয়ের কারণে বড় মিয়া ও কালুর উপযুক্ত দাম পাবেন এমন আশা গরুর মালিক মো. মোহন হাওলাদারের।
বাগেরহাট সদর উপজেলার দেপাড়া বাজারের পেছনেই তার খামারটি। বিদেশ ফেরত মোহন হাওলাদারের এ খামারে ২ বছর ৬ মাস আগে জন্ম হয় ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় বড় মিয়ার। ৮ ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা বড়মিয়ার উচ্চতা এখন পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি। ওজন হবে ২০ মণের উপরে। কালো রংয়ের মধ্যে সামনের, পিছনের পা ও পেটের নিচের দিকে সাদা। কালো মাথার মাঝে রয়েছে বড় একটি সাদা টিকা। যে কারণে বড়মিয়ার সৌন্দর্য্য আরও বেড়ে গিয়েছে।
দুই বছর বয়সী একই জাতের কালুর উচ্চতা এখন ছয় ফুট। নয় ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা কালুর ওজন হবে ২০ মণের উপরে। সারা শরীরে কালো রং থাকলেও, মাথায় রয়েছে সাদা টিকা। বড় মিয়া ও কালুকে দেখলে যে কারও চোখ জুড়িয়ে যায়। বড় মিয়া ও কালু এখন স্থানীয়দের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গরু দুটি যেন এখন আর মোহন হাওলাদারের নেই, এলাকার সবার হয়ে গেছে। কোনো খদ্দের এলেই স্থানীয়রা নিয়ে আসেন বড় মিয়া ও কালুকে দেখাতে। এত বড় গরু আশপাশে না থাকায় প্রতিদিন প্রচুর লোক আসছে কালু ও বড়মিয়াকে দেখতে।
স্থানীয় লতিফ, নান্টু মল্লিক, কাজী মতিনসহ কয়েকজন বলেন, ‘মাসখানেক ধরেই প্রতিদিন কোনো না কোনো ক্রেতা আসছেন মোহনের খামারে। কেউ কেউ ক্রেতা বেশে দেখতেও আসেন। এলাকায় এত বড় গরু থাকায় আমাদের ভালোই লাগে।’
বড় মিয়া ও কালুর মালিক মোহন হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে গরু মোটাতাজাকরণ ও দুধের ব্যবসা শুরু করি। নিজ খামারেই বড় মিয়া ও কালুর জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে ওদের কাঁচা ঘাস, ভাতের মাড়, গমের ভুষি, খুদের ভাত ও ভুট্টাসহ দেশীয় সব খাবার খাইয়েছি। মোটাতাজাকরণের জন্য কখনও মেডিসিন বা ইনজেকশন ব্যবহার করিনি। তারপরও আমার গরু অনেক বড় হয়েছে। গেল বছরও অনেকে বড় মিয়ার দাম বলেছে, কিন্তু বিক্রি করিনি। এবার বড় মিয়া ও কালু দু’জনকেই বিক্রি করব। আমি ১৫ লাখ টাকা দাম চেয়েছি। ইতোমধ্যে আট লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। আশাকরি কোরবানির আগ মুহূর্তে পছন্দমত দামে গরু দুটি বিক্রি করতে পারব।’
বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ‘দেপাড়া বাজারের মোহন হাওলাদার একজন ভাল গরু ব্যবসায়ী। তাকে প্রথম থেকেই আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছি। এ বছর তার খামারে দুটি গরু রয়েছে। গরু দুটোর আকার বেশ বড়। দেশীয় খাবারেই মোটাতাজা করা হয়েছে এদের। আশাকরি কোরবানির আগ মুহূর্তে ভালো দামেই বিক্রি হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম