Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ২৪শে জুলাই, ২০২৫ । ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

ইউজিসি নেট জিআরএফ-২০২৫ সারা ভারতে র‍্যাঙ্কে শীর্ষে নিলুফা ইয়াসমিন

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন, কলকাতা

সাফল্যের শিখরে উঠে পূর্ব বর্ধমানের গোটা কাটোয়া শহরকে গর্বিত করলেন নিলুফা ইয়াসমিন। সর্ব ভারতীয় স্তরের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতা ইউজিসি নেট জিআরএফ-২০২৫ পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্কে শীর্ষ স্হান অর্জন করেছেন এই নিলুফা ইয়াসমিন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পালিটা রোড এলাকার বাসিন্দা নিলুফার এই কৃতিত্বে উৎসবে মেতেছে তার পরিবার, পাড়া, এমনকি গোটা কাটোয়া শহর ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। নিলুফা ইয়াসমিন এখন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএচডি করছেন। এর আগেই তার এই সাফল্য গর্বিত গোটা পশ্চিমবঙ্গও।

এই চূড়ান্ত সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক অবিচল মনোযোগ, কঠোর অধ্যবসায় আর অদম্য জেদ।

নিলুফা জানিয়েছেন, এর আগেও দু’বার তিনি এই পরীক্ষায় বসেছিলেন, কিন্তু ফল আশানুরূপ হয়নি। ব্যর্থতা যে সাফল্যের স্তম্ভ এটাকেই তিনি বিশেষ গুরুত্ব দেন। অনেকেই হয়তো সেখানেই থেমে যেতেন কিন্তু নিলুফা থামেননি। বরং প্রতিবার ব্যর্থতার পর নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছেন, নিজের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে এগিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, প্রথম দু’বার ব্যর্থ হই। মন খারাপ হয়েছিল, কিন্তু ভেঙে পড়িনি। জানতাম আমি পারব। এবারের প্রস্তুতিতে ছিল দৃঢ় লক্ষ্য শুধুই পাশ নয়, শীর্ষে পৌঁছানোর।

ফল প্রকাশের পর প্রথমে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেননি নিলুফা। তাঁর অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্ক ১ দেখে আনন্দে চোখে জল আসে পরিবারের সদস্যদের। মা-বাবা, শিক্ষক, প্রতিবেশী সবাই উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন। ছোট শহর থেকে উঠে এসে সর্বোচ্চ র‍্যাংক অর্জন করা যেন স্বপ্নের মতো।

নিলুফা শুরু থেকেই পড়াশোনার প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। পরবর্তীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরেও তিনি বরাবরই অসাধারণ ফল করেন। শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার আগ্রহ থেকেই তিনি UGC NET ও JRF-এর প্রস্তুতি শুরু করেন।

এই সাফল্যের পর কী পরিকল্পনা? উত্তরে নিলুফা বলেন, দেশের একজন শিক্ষিকা হিসেবে গবেষণায় অবদান রাখতে চাই। উচ্চশিক্ষার জগতে কিছু অর্থবহ কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে পিএইচডি-তে ভর্তি হয়ে গবেষণার মাধ্যমে সমাজে কিছু ফিরিয়ে দেওয়াই এখন লক্ষ্য।

নিলুফার এই কৃতিত্ব কাটোয়ার মতো শহরের শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের কাছে এক বড় অনুপ্রেরণা। প্রমাণ করে দিলেন প্রতিভা, পরিশ্রম ও সাহস থাকলে সীমাবদ্ধতা কোন বাধা হতে পারে না। তাঁর এই সাফল্যে আজ শুধু তাঁর পরিবার নয়, গোটা কাটোয়া গর্ব অনুভব করছে।

নিলুফার গল্প হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য এক উদাহরণ বারবার ব্যর্থ হলেও হাল না ছেড়ে চেষ্টা চালিয়ে গেলে সাফল্য ধরা দিতেই পারে। তাঁর এই অধ্যবসায় ও অর্জন ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

বাঙালির মেধা লড়াইয়ের জায়গায় লেখা থাকুক নিলুফা ইয়াসমিনের নাম স্বর্ণাক্ষরে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন