Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বুধবার । ২৩শে জুলাই, ২০২৫ । ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এক ম্যাচ হাতে রেখেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে এটিই টাইগারদের প্রথম সিরিজ জয়। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি জিতেছিল ৭ উইকেটে, আর দ্বিতীয় ম্যাচ বাংলাদেশ জিতল ৮ রানের ব্যবধানে। মিরপুরে ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ বল বাকি থাকতে ১২৫ অলআউট হয় সফরকারীরা।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তান অধিনায়ক আগা সালমান। আগে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। তবে জাকের আলীর ৪৮ বলে ৫৫ ও শেখ মেহেদী হাসানের ২৫ বলে ৩৩ রানের সুবাদে ১৩৩ রানের পুঁজি পায় টাইগাররা।

১৩৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাকিব-শরিফুলদের তোপের মুখে পড়েন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে ১৫ রান জমা করতেই টপ-অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারায় সফরকারীরা। প্রথম ওভারেই রিশাদের দারুণ থ্রো-তে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাইম আইয়ুব। পরের ওভারেই মোহাম্মদ হারিসকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে যান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

চতুর্থ ওভারে বল করতে এসে এবার ফখর জামানকে ফেরান শরিফুল। আগের ম্যাচে একাই লড়াই করেছিলেন এই ওপেনার। ৩৪ বলে খেলেছিলেন ৪৪ রানের ইনিংস। সেই ফখর জামান আজ শরিফুলের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ৮ রান।

পঞ্চম ওভারে বল করতে এসেই হাসান নাওয়াজকে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব। লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৬ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি এই ব্যাটার। পরের বলেই মোহাম্মদ নাওয়াজকে লিটনের ক্যাচ বানান সাকিব। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে খুশদিলকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আগা সালমান। মেহেদীর বলে ২৩ বলে ৯ রান করা আগা সালমান ফিরলে ভাঙে তাদের ২৮ বলে ১৫ রানের জুটি। এরপর ফাহিম আশরাফকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন খুশদিল। মেহেদীর বলে এলবিডব্লিউ-এর ফাঁদে পড়ে খুশদিল ফিরলে ভাঙে তাদের ১৫ বলে ১৭ রানের জুটি।

অষ্টম উইকেট জুটিতে দলকে জয়ের আশা দেখাচ্ছিলেন ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি। তবে ১৭তম ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই আব্বাস আফ্রিদিকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার। আর তাতেই ভাঙে তাদের ২৭ বলে ৪১ রানের জুটি। সেইসঙ্গে স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে।

জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত এমন ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন ভেঙে বাংলাদেশ একাদশে নেয় নাঈম শেখ ও শরিফুল ইসলামকে। এ ম্যাচে একাদশ থেকে বাদ পড়েন তানজিদ তামিম ও তাসকিন আহমেদ।

দুই পরিবর্তন নিয়ে ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদেরও। দ্বিতীয় ওভারেই ফাহিম আশরাফকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দেন নাঈম শেখ। ৭ বলে ৩ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। দলে ফিরে আগের সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চারে নেমেছিলেন নাঈম। তাকে চার নম্বরে খেলানোর সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি টাইগার সমর্থকরা। সেই ম্যাচে ২৯ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে সমালোচিত হন নাঈম নিজেও, বাদ পড়েন পরের দুই ম্যাচে। এবার পছন্দের পজিশনে নেমেও ব্যর্থ তিনি।

নাঈমের পর ক্রিজে আসা অধিনায়ক লিটন দাসও ফিরেছেন ক্যাচ দিয়ে। সালমান মির্জার করা পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন লিটন। সাজঘরে ফিরেছেন ৯ বলে ৮ রান করে। প্রথম ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন টাইগার দলপতি, করেছিলেন ১ রান।

সেই ওভারেই রানআউটে বিদায় নেন তাওহীদ হৃদয়। আগা সালমানের ডিরেক্ট থ্রোয়ে বিদায়ের আগে রানের খাতাও খুলতে পারেননি এই ব্যাটার। আগের ম্যাচে অর্ধশতক হাঁকিয়ে জয় এনে দেয়া ইমনও ব্যর্থ আজ। ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেয়ার আগে ১৪ বলে করেছেন ১৩ রান। আহমেদ দানিয়েলের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম শিকার হয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। পাওয়ারপ্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৮ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ।

পথ হারানো দলকে টেনে তুলতে থাকেন জাকের ও শেখ মেহেদীর জুটি। যদিও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল তাদের। বিশেষ করে, জাকের বেশিই ডট খেলছিলেন। প্রথম ১০ ওভারে আর উইকেট না হারালেও মাত্র ৫৩ রান তুলতে পারে টাইগাররা।

এই জুটি ৫৩ রান যোগ করে। ১৪তম ওভারের শেষ বলে আউট হন মেহেদী। তার আগে ২৫ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় করেন ৩৩ রান। মেহেদীর বিদায়ের পর ক্রিজে আসা শামীম হোসেন ৪ বলে ১ রান করে বোল্ড হন দানিয়েলকে কাট করতে গিয়ে।

শেষদিকে একাই লড়েছেন জাকের। অন্যদিকে ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল। তানজিম সাকিব ৪ বলে ৭, রিশাদ ৪ বলে ৮ রান করে ছোট ছোট অবদান রেখেছেন। শেষ ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে জাকের ১ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৫ রান করেন। এটি তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক। পাকিস্তানের পক্ষে সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়েল ও আব্বাস আফ্রিদি ২টি করে উইকেট শিকার করেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেন ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ।

খুলনা গেজেট/এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন