রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার বেলা ২টায় জাতীয় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সাত দফা দাবি আদায়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রস্তুতি, প্রচার ও মাঠপর্যায়ের ব্যাপক কাজ করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় দলটি।
তবে সমাবেশ শুরু হওয়ার দীর্ঘ সময় আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। উদ্যানেই ফজরের নামাজে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশাল জামাত। সকাল ৭টার মধ্যেই পরিপূণ হয়ে গেছে উদ্যানের বেশিরভাগ অংশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত থেকেই উদ্যানে হাজির হতে থাকেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ফজরের আগেই সমাবেশস্থলের অধিকাংশ জায়গা পূর্ণ হয়ে যায়। ফজরের সেখানে নামাজ আদায় করেন তারা। ফজরের পর দূরের গাড়ি পৌছাতে শুরু করলে সমাবেশস্থল পূর্ণ হয়ে যায়।
তকাল বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেন। উদ্যান পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আল-হামদুলিল্লাহ, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ‘জাতীয় সমাবেশ’ অনুষ্ঠানের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আল্লাহ তায়ালার কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করছি, তিনি যেন আমাদের জাতীয় সমাবেশ যথাযথভাবে সফল করার তাওফিক দান করেন। আপনারাও দোয়া করবেন এবং দেশবাসীর কাছেও দোয়া চাই।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমিরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান জাতীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন। তিনি আকাক্সক্ষার স্বপ্ন অনুযায়ী ঐক্যের ডাক দিয়ে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রগঠনের লক্ষ্যে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আপনাদের সবাইকে সালাম জানিয়েছেন। দেশবাসীর কাছে তিনি দোয়া চেয়েছেন। আমাদের দীর্ঘদিনের সাধনা অনুযায়ী মানুষের এ আকাক্সক্ষার জাতীয় সমাবেশ যেন সুষ্ঠুভাবে সাফল্যমণ্ডিত হয়।
তিনি আরো বলেন, সমাবেশে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে কয়েক লাখ লোকের আগমন ঘটবে। এতে বাড়তি যানজট তৈরি হবে। সেজন্য বৃহস্পতিবার আমরা ঢাকাবাসী ও দেশবাসীর কাছে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছি। আজও আমরা রাজধানী ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
জনসমাগম নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি : জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জোবায়ের বলেন, আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনসমাগম আশা করছি। এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি বাস, একাধিক স্পেশাল ট্রেন ও নৌযান রিজার্ভ করা হয়েছে।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে প্রায় দেড় হাজার বাস, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন এবং নৌপথে লঞ্চ রিজার্ভেশন দেয়া হয়েছে। কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাসায় থেকেও সমাবেশে অংশ নেবেন।
সংগঠনিক সমন্বয় : দলটি থেকে জানানো হয়, মাঠে মোতায়েন থাকবে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক, থাকবে বিশেষ পোশাক, ডিউটি কার্ড ও দায়িত্বভাগ। ঢাকা মহানগর ও আশপাশের জেলা থেকে আগতদের জন্য ১৫টি পার্কিং স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ও বাইরে থাকবে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ, প্রতিটিতে এমবিবিএস ডাক্তার, জরুরি ওষুধ ও অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা থাকবে।
সমাবেশের সম্পূর্ণ কার্যক্রম ড্রোন ও আধুনিক ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা হবে। ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করা হবে, মাঠে থাকবে বড় আকারের এলইডি স্ক্রিন।
খুলনা গেজেট/এইচ