Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বুধবার । ২৩শে জুলাই, ২০২৫ । ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

আবারও শুরু হচ্ছে মোংলা বন্দরের নৌ চ্যানেলের খনন কাজ

মোংলা প্রতিনিধি

চ্যানেলের গভীরতা ঠিক রাখতে আবারও শুরু হচ্ছে মোংলা বন্দরের ড্রেজিংয়ের কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এই বন্দরে দেশি-বিদেশি বড় বড় বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়তে পারবে। এছাড়া ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হলে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে বন্দরের গতি বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দর সূত্র জানায়, নৌ-বাহিনীর তত্বাবধায়নে এই ড্রেজিং প্রকল্পে ব্যয় হবে এক হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মৃতপ্রায় বন্দরে পরিণত হয়েছিল মোংলা বন্দর। সে সময় বন্দরটি অচল হয়ে পড়ার মূল কারণ ছিল বন্দরের আউটার ও ইনারবার চ্যানেলে ড্রেজিং না করা। যার কারণে ওই সময়ে চরম নাব্যসংকট দেখা দেওয়ায় জাহাজ ভিড়তে পারত না এ বন্দরে। মাসের পর মাস জাহাজ শূন্য হয়ে অচলাবস্থা ছিল বন্দর জুড়ে। বন্দরের আউটারবার (বর্হিনোঙ্গর) ও ইনারবারে (অভ্যন্তরীন) নাব্য সংকটের কারণে কনটেইনারবাহী ৯ দশমিক ৫০ মিটার গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ মোংলা বন্দরে সরাসরি প্রবেশ করতে না পারায় কন্টেইনারাইজড মালামাল আমদানি-রপ্তানিতে ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহী হয়ে পড়েন।

২০২০ সালে ৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কিলোমিটার আউটারবার ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হয়। এখন আউটারবার চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ অনায়াসে আসা যাওয়া করছে। পরে বন্দর জেটিতে স্বাভাবিক জোয়ারে ৯ দশমিক ৫০ মিটারের অধিক গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ আনার জন্য মোংলা বন্দরের ১৪৫ কিলোমিটার নৌ চ্যানেলের মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার নৌ পথ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে বন্দরের যেমন সক্ষমতা বাড়বে একই সাথে নৌ চ্যানেলের নাব্যতা ফিরলে বড় জাহাজ আর কোন সমস্যা হবেনা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা প্রধান মোঃ জহিরুল হক জানান, নৌ চ্যানেল এই বন্দরের প্রাণ। সেই চ্যানেলকে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য মোংলা বন্দর এরই মধ্যে একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি পাঁচ বছর মেয়াদে নৌবাহিনীর তত্বাবধায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। এক হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নৌ বাহিনী অত্যান্ত দক্ষতার শেষ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান জানান, ‘দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে নিয়মিত পশুর চ্যানেল ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। প্রথম আউটারবার ড্রেজিং শেষ করে ২০২১ সালের ১৩ মার্চ ইনারবার ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যাক্রমে মোংলা বন্দর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে আমরা সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি’।

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর বন্দরে রেকর্ড সংখ্যক জাহাজের আগামন-নির্গমনের সাথে রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরকে আরও গতিশীল ও আধুনিক করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে কিছু প্রকল্প শেষ হয়েছে এবং কিছু চলমান রয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনারবার বা অভ্যন্তরীন চ্যানেল ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে এবং পশুর চ্যানেল সংরক্ষণ ড্রেজিং শুরু করতে যাচ্ছি। গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মযজ্ঞ শেষ হলে মোংলা বন্দরের নাব্যসংকট নিরসনসহ গতিধারা ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে’।

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম, জুলফিকার আলী ও ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, দেশের অন্যতম এই বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গতিশীল বাড়াতে নৌ চ্যানেলে ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। তাই ড্রেজিং কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে। আর কোন কারণে ড্রেজিং বন্ধ হয়ে গেলে জাহাজ আসা যাওয়া ব্যহত হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে বন্দর এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন