মক্কায় গিয়ে হজ করে নিজের দেশে ফেরার সুযোগ আছে এমন মুসলমানের জন্য জিলহজ মাসে হজ করা ফরজ। জীবনে একবার হজ করা ফরজ। আর সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর প্রতি বছর ১০ জিলহজ কোরবানি করা ওয়াজিব।
কোরবাদিদাতার জন্য জিলহজের ১০ তারিখ কোরবানি করার পাশাপাশি জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন কোরবানি করার আগে নখ-চুল না কাটা সুন্নত। অনেকেই জিলহজ মাসে কোরবানির আগে নখ চুল কাটাকে হারাম এবং নিষিদ্ধ মনে করেন। কিন্তু এমন ধারণা সঠিক নয়।
ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতে, যদি কেউ ঈদুল আজহায় কোরবানির নিয়ত করে থাকেন, তবে তার জন্য জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন চুল ও নখ না কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসের ভিত্তিতে আলেমরা এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কোনো কোনো আলেম জিলহজের প্রথম ১০ দিন নখ-চুল কাটাকে নিষিদ্ধ করে করেছেন। আবার কেউ কেউ একে সুন্নত বা উত্তম আমল হিসেবে দেখেছেন।
হাদিসে জিলহজের প্রথম ১০ দিন চুল ও নখ কাটার প্রসঙ্গ
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা করে, তবে সে যেন জিলহজ মাস শুরু হওয়ার পর চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে। (সহিহ মুসলিম)
জিলহজের প্রথম ১০ দিনের করণীয় ও বর্জণীয়
করণীয় :
বেশি বেশি নেক আমল করা।
রোজা রাখা।
তাসবিহ, তাহলিল, তাহমিদ বলা।
কোরবানির প্রস্তুতি নেওয়া।
বর্জণীয় :
যারা কোরবানি দিতে চান, তারা কোরবানির আগে চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবেন। যারা কোরবানি দিবেন না, তারাও এই আমলটি করতে পারেন।
ফেকাহবিদদের মতামত :
ইমাম মালিক, ইমাম আহমদ এবং ইমাম শাফি (রহ.)-এর মতে— জিলহজের প্রথম ১০ দিন চুল ও নখ কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকা প্রায় ফরজের সমান গুরুত্বপূর্ণ ।
হানাফি মাজহাব অনুয়ায়ী এটি (অর্থাৎ, জিলহজের প্রথম ১০ দিন চুল ও নখ না কাটা) সুন্নতে মুয়াক্কাদা। অর্থাৎ, না কাটাই উত্তম।
কোরবানির পর চুল-নখ কাটা
কোরবানি সম্পন্ন করার পর চুল ও নখ কাটা সম্পূর্ণভাবে বৈধ। আলেমগণ বলেন, এই চুল ও নখও কোরবানির পশুর চুলের মতো নেক আমলের হিসেবে গণ্য হবে।
আলেমদের মতে, জিলহজের প্রথম ১০ দিন চুল ও নখ কাটা হারাম নয়, কিন্তু যারা কোরবানি দিতে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এই সময়ে চুল ও নখ না কাটা সওয়াবের কাজ এবং রাসুল (সা.) এর সুন্নাতের অনুসরণের অর্ন্তভুক্ত।
খুলনা গেজেট/এএজে