খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

শবে কদর অনির্দিষ্ট রাখা হয়েছে যে কারণে

গেজেট ডেস্ক 

কদরের রাতের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মাধ্যমে বোঝা যাবে কদরের রাত কোনটি। হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.)-কে শবে কদর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তর দেন যে—

তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রে অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে বা রমজানের শেষ রাতে হয়। যে ব্যক্তি শবে কদরে ঈমানের সহিত, সওয়াব লাভের আশায় দাঁড়ায় তার অতিতের যাবতীয় গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

তারপর রাসুল (সা.) এই রাতের কিছু আলামতের বর্ণনা দেন।

আলামতসমূহের কিছু হলো—

ওই রাতটা নির্মল ঝলমলে হবে, নিঝুম নিথর না অধিক গরম, না অধিক ঠান্ডা; বরং সব কিছু মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকবে। (নূরের আধিক্যের কারণে) ওই রাতের আকাশ, চাঁদনী রাতের মতো মনে হবে, ওই রাতে তারকা এদিক সেদিক ছুটে পড়ে না।

তার আরও একটি আলামত হচ্ছে পরদিন সকালে সূর্য কিরণবিহীন একেবারে গোলাকার পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উদিত হয়। আল্লাহ পাক সেই দিনের সূর্যোদয়ের সময় তার সঙ্গে শয়তানের আত্মপ্রকাশকে বন্ধ করে দিয়েছেন। (দূররে মানসূর : আহমদ ও বায়হাকি)

উবাদা ইবনুস সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের (নির্দিষ্ট তারিখ) অবহিত করার জন্য বের হয়েছিলেন। তখন দু’জন মুসলিম ঝগড়া করছিল। তা দেখে তিনি বললেন—

আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদরের সংবাদ দেওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম, তখন অমুক অমুক ঝগড়া করছিল, ফলে তার (নির্দিষ্ট তারিখের) পরিচয় হারিয়ে যায়। সম্ভবত; এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তা তালাশ কর। (বুখারি, হাদিস : ১৮৮১)

উপরে বর্ণিত হাদিসটির মাধ্যমে বুঝা যায়— পরস্পরের দ্বন্দ্ব-কলহ, ঝগড়া-ঝাটির কারণে মানুষ আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। রাসূল সা. সাহাবিদেরকে শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানাতে এসে শুধুমাত্র দুইজনের ঝগড়া-ঝাটির কারণে তা জানাননি। আল্লাহ তায়ালা তাকে তা ভুলিয়ে দিয়েছেন। এজন্য পরস্পরের দ্বন্দ্ব-কলহ, ঝগড়া-ঝাটি থেকে বিরত থাকতে হবে। নইলে এই রাত পেয়েও আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।

শবে কদর অর্নিদিষ্ট রাখার কিছু রহস্য

১. শবেকদর নির্দিষ্ট থাকলে শবে কদরের আশায় তখন অন্য রাতেও মানুষ যে ইবাদত করে তা একেবারে ছেড়ে দিতো।

২. সব সময়ই কিছু কিছু লোকের গুনাহ হয়েই থাকে, এভাবে শবেকদরের মতো মহা মর্যাদাবান রাত জেনেও তারা গুনাহ করত আর ধ্বংস হয়ে যেত।

৩. শবে কদর নির্দিষ্ট থাকলে দুর্ভাগ্যবশত যদি কারও সে রাতে ইবাদত করা হয়ে না উঠত, তাহলে সে চরম হতাশ হয়ে রাত্র জাগরণই একেবারে ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হতো।

৪. এখন শবে কদর অনির্দিষ্ট থাকায় যত রাতই জাগরণ করবে, তার জন্য পৃথক পৃথক সওয়াব প্রাপ্ত হবে। হতে পারে শবেকদরের ফজিলত অর্জনের নিয়তে রাত্র জাগরণ করছে, বিধায় যত রাতেই জাগরণ করবে প্রতি রাতেই শবেকদরের সওয়াব প্রাপ্ত হবে। কেননা, আল্লাহপাক খাঁটি নিয়তের ভিত্তিতে সওয়াব প্রদান করে থাকেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!