খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৪৫
  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

সরকারি নির্দেশনা কাজে আসেনি, চড়া মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য

কামাল মোস্তফা

সরকার কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার দেড় মাসের বেশি সময় পার হলেও এখনো পূর্বের দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য। সরকারের নির্দেশনা মানেনি ব্যবসায়ীরা। ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, আলু, ডিম, চাল ও সবজির চড়া দামের মধ্যে ডালের বাড়তি দর বিপাকে ফেলছে ক্রেতাদের।

খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-৭ টাকা। দোকানে ছোট দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা ও মোটা দানা ৭৫-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই বাজারে প্যাকেটজাত মসুরের ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

দেশে ডালের দাম বেশ কয়েক মাস স্থিতিশীল ছিল। নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় দেশীয় বাজারেও দাম বাড়ছে।

ভোজ্য তেলের দামও দীর্ঘ সময় ধরে বাড়তি। খোলা সয়াবিন লিটার প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০৮ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন ১১০ টাকা লিটার। অথচ দেড় মাস আগেও খোলা সয়াবিন তেল ৮৩/৮৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে আলুর দাম আর কমেনি। খুচরা বাজারে ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার নির্ধারিত দর প্রতি কেজি ৩৫ টাকা। এদিকে বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করলেও দাম কেজি প্রতি ১৪০-১৫০ টাকা। ক্রেতা আবু সুফিয়ান বলেন, আর কত দিন এভাবে চলবে? বাজারে প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। জীবন চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

তবে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি হালি (৪টি) ফার্মের ডিমের দাম ৩৪-৩৬ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গল্লামারী বাজারের ডিম বিক্রেতা মোঃ আবু হানিফ বলেন, ডিমের দাম হালিতে ২ টাকা কমেছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম এখনো স্বাভাবিক হয়নি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে। আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকায়।

এদিকে গেল ২৯ সেপ্টেম্বর সরকার মাঝারি ও সরু চালের পাইকারি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল। নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি কেজি সরু মিনিকেট চাল ৫১ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫৭৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। মাঝারি মানের চাল প্রতিকেজি ৪৫ টাকা ও বস্তা ২ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। কিন্তু কথা রাখেনি কোন স্তরের ব্যবসায়ী। বাজারে উচ্চমূল্যেই বিক্রি হচ্ছে চাল। বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরু মিনিকেট ৬০-৬২ টাকা, মাঝারি মানের মিনিকেট ৫৪/৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরেই খুলনার সবজির বাজার চড়া। এরই মধ্যে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলেও তা সাধারণ মানুষের নাগালে বাইরে। নগরীর সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজির দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকার বেশি। ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে অসহায়। দফায় দফায় দ্রব্য মূল্যের দাম নির্ধারণ করলেও বাজারে তার কোন প্রভাব নেই। সরকারি সংস্থাগুলোর বাজার তদারকিকে দায় সারা মনে করছেন তারা। তাদের দাবি অবিলম্বে দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে আলুর বাড়তি দামের মধ্যেও টিসিবি খুলনায় খোলা বাজারে আলু বিক্রি করেনি। আগে ভোজ্য তেল, ডাল, চিনি,আটা বিক্রি করলেও এখন তাও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে তারা আরও বিপাকে পড়েছেন।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) খুলনা অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে তারা শুধু ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করবে। টিসিবির অন্যান্য পণ্য বিক্রি আপাতত বন্ধে করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই অন্য নিত্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করবেন।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!