রাজধানীর উপকণ্ঠ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর এখন মুখরিত। বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আসরে অংশ নিতে জড়ো হয়েছেন দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানে শুরু হবে প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। অবশ্য রেওয়াজ অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর বয়ান হবে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান, ইবাদত-বন্দেগির নিয়ম ও করণীয় বিষয়ে। ইমান, আমল, আখলাখসহ তাবলিগের ছয় মূলনীতির ওপর তিন দিন বয়ান করবেন শীর্ষ মুরব্বিরা।
মুসল্লিদের জন্য ময়দানকে বিভিন্ন খিত্তায় ভাগ করে একজন করে জিম্মাদার রাখা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন আগতরা। ইতোমধ্যে ময়দানে হাজির হয়েছেন পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ ও ইরানের সহস্রাধিক মুসল্লি। গতকাল রাতে বিশাল শামিয়ানার নিচে আশ্রয় নেন তারা।
গতকাল ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও র্যাবের ডিজি খুরশিদ হোসেন। পরে আইজিপি বলেন, ইজতেমায় ১৫ হাজার পুলিশ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সব ইউনিটের পাশাপাশি র্যাব কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ঠেকাতে সাইবার টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ সময় ইজতেমা ঘিরে সহিংসতার কোনো শঙ্কা নেই জানিয়ে র্যাব ডিজি খুরশিদ হোসেন বলেন, ময়দান দুটি ভাগ করা হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তায় আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হেলিকপ্টার টহল থাকবে। নজরদারি হবে ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরায়।
ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে মুসল্লিরা বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করেছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেশি মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আশাবাদী।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইজতেমা শেষ করতে পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ দল ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বে থাকবে। প্রথম পর্ব শেষে মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা ময়দান বুঝিয়ে দেবে। পরে মাওলানা সা’দপন্থিদের কাছে ইজতেমা মাঠ হস্তান্তর করার পর আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
এদিকে ইজতেমায় আসার পথে গতকাল টঙ্গীতে ইউনুছ মিয়া (৬০) এবং ময়দানে জামাল উদ্দিন (৪০) নামে দুই মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। ইউনুছ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউরা গ্রামের মৃত বুদু মিয়ার ছেলে। আর জামাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চৌহদ্দী গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারহানা তাসমিন জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা।