খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

অভয়নগরে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা, চিকিৎসকরা যা বল‌ছেন

অভয়নগর প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগরে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। ছোট বড় সবার মাঝে রোগটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। ডাক্তারি পরিভাষায় এটাকে কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। চোখের একেবারে বাইরের স্বচ্ছ অংশটির ডাক্তারি নাম ‘কনজাংকটিভা’।

ভাইরাসের সংক্রমণে সেখানে তৈরি হয় প্রদাহ, ফুলে যায় চোখের ছোট ছোট রক্তনালি। ফুলে থাকা রক্তনালিগুলোর কারণেই চোখের রং লালচে হয়ে যায়, যেটাকে চোখ ওঠা বা ‘কনজাংকটিভাইটিস’ বলা হয়। ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় দ্রুত অন্যের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

চিকিৎসকের পরামর্শ, এ রোগ হলে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ওয়াহিদুজ্জামান এর বরাত দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শোভন বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে জানান, ‘চোখ ওঠা একটি স্পর্শ কাতর রোগ। বর্তমানে এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা সাধারণত হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়াল। এ রোগ খুবই ছোয়াছে ধরনের। এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে সাধারণত এক চোখে আক্রান্ত হয়। তবে একই সাথে বা কিছুদিন পর অপর চোখ আক্রান্ত হতে পারে।’ তিনি আরও জানান, চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা নিতে আসা একজন অভিভাবক বলেন, উপজেলার একটি মাদ্রাসায় এক সাথে সাতজন শিক্ষার্থী চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার সন্তানকে বাড়ি এনে রাখার পর ওই অভিভাবক নিজেও এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ সর্ম্পকে ডাঃ শোভন বিশ্বাস জানান, প্রথমে চোখ লালচে হয়, পরে ঘুম থেকে ওঠার পর দেখা যায় চোখে ময়লা জমে থাকে। খচখচে ভাব থাকা, চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে বার বার সাদা ময়লা আসা, কিছু ক্ষেত্রে চোখে তীব্র ব্যথা। তিনি জানান, এ রোগ একটি চোখ ভালো হতে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগে। সাতদিন পর অন্য চোখে আক্রান্ত হতে পারে বা রোগ সেরে যেতে পারে। এ রোগটি সাধারণত তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়াল, ভাইরাল, ফাংগাল। তবে ভাইরাল হলে বেশি খারাপের দিকে যায়। তাই এ রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান।

চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। আর এখন বৃষ্টির সময় থাকায় এটা খুবই সাধারণ ভাবে হতে পারে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ, টিস্যু অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আক্রান্ত হয়। এছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি ছড়ায় বার বার হাত চোখে দিলে।

এ রোগের প্রতিকার হিসেবে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ ব্যবহার না করা। পুকুর বা নদী নালায় গোসল না করা। চোখের পানি সাবধানে টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহার করা সেই টিস্যু সাবধানে নিরাপদ স্থানে ফেলতে হবে। যাতে করে রোগ না ছড়ায়। চোখ ঘষা বা চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে। একজন থেকে অন্যজনকে এ রোগ থেকে বাঁচাতে রোগীকে আলাদা করতে হবে এবং রোগীর ব্যবহার করা সামগ্রী অন্যদের ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি চোখে কালো চশমা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া।

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!