খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  প্রতিযোগিতামূলক করতে প্রতীক ছাড়া স্থানীয় নির্বাচন করছে আ’লীগ, অন্য দল প্রতীক দিয়ে নির্বাচনে যেতে পারে : ওবায়দুল কাদের

নজর দিবে কে ?

সৈয়দা আরিফা আশরাফি চুমকি

আমার বাড়ির পাশেই খুলনার মিস্ত্রীপাড়া বাজার। মোটামুটি একটা বড় বাজারই বলা যায়। মাছ, মাংস, মুরগী, চাল ডাল সহ সকল রকম তরিতরকারি পাওয়া যায়। দুর দূরান্ত থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা আসে এই বাজারে। প্রায় ১৫/২০ দিন পর কি মনে করে গেলাম। সকাল দশটা তখন। এমন কি ছুটির দিন শুক্রবার। কিন্তু বাজারে তেমন ভিড় নেই। এক কথায় লোক সমাগম কম। বিভিন্ন দোকানে ব্যবসায়ীরা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। একজনের কাছে এই অবস্থার কথা জানতে চাইলে বললো গত দু’মাস আগে যে খরিদ্দার ছিল বাজারে তার অর্ধেকও আসেনা এখন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে।

এক গরু মাংস বিক্রেতা বললেন, আগে ছুটির দিন ৩/৪ টি গরুর মাংস বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু গেল ১৫ দিন হলো একটা গরুর মাংস বিক্রি করাও কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। একই অবস্থা মাছ ও কাঁচা মালের বাজারে। আগে একটা পরিবারে এক মাসে যে খরচ হতো তার দুই গুণ খরচ করেও সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।

করিম নামে এক রিক্সা চালক জানালেন, গত এক মাসে মাংস তো দূরের কথা কোন মাছ বাচ্চাদের পাতে দিতে পারিনি। গরীবের ভরসা বয়লার মুরগী বা ডিমও এখন নাগালের বাইরে। উপরন্তু পাংগাছ ও তেলাপিয়া মাছও এখনো নিম্নবিত্ত পরিবারের নাগালের মধ্যে নেই ।

খুলনার বিভিন্ন বাজারে কাঁচা তরিতরকারি সিংহভাগ আসে মহানগরীর পাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে। এই সকল টাটকা তরিতরকারি কেনার জন্য খুলনা নতুন বাজার, গল্লামারী এবং মিস্ত্রিপাড়া বাজারে খুলনা নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খরিদ্দার এসে থাকে। কিন্তু পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতা অনেকাংশেই কমে গেছে। আর ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন পরিবহন খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়াকে। একই সাথে উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে।

চাল ডাল সয়াবিন তেলের দাম তো এক বছর ধরে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু মড়ার উপর খাড়ার ঘা ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোল সহ সকল রকম জ্বালানি তেলের মূল্য এক রাতে প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ বৃদ্ধি পাওয়া। ফলে পরিবহন খরচ যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে। তেমন উৎপাদন খরচও বেড়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয়ও বাড়েনি।

অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার মনিটরিং সহ জেলা প্রশাসন মোবাইল টিম দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। কথা হলো কি, এটা কি যথেষ্ঠ। তারা যত সময় মনিটর করেন ততসময় কিছুটা ঠিক থাকে। কিন্তু মনিটরিং টিম চলে গেলে আবারও একই অবস্থা।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব আছে ঠিকই। কিন্তু এর বাইরে আছে মজুদদার, সিন্ডিকেট ও প্রভাবশালী এক চক্র। এদের গলায় ঘন্টা বাধবে কে? কে তাকাবে নিম্নবিত্তের দিকে ?

খুলনা গেজেট/এইচআরডি




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!