বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাজাহান। পিতা মৃত আমিন উদ্দিন আহমেদ আর মাতা মৃত আছিয়া খাতুন। সাউথ সেন্ট্রাল রোডের অধিবাসী। জন্মেছেন ১৯৫৩ সালের ২৭ অক্টোবর। জাতির এ শেষ্ঠ সন্তান ইন্তেকাল করেছেন ২০০৯ সালের ২৯ নভেম্বর। তার যুদ্ধ জীবনের বীরত্বগাঁথা দিনগুলো প্রকাশিত হয়েছে মুজিববাহিনী খুলনা জেলা ৭১ গ্রন্থে।
এ গ্রন্থে তার যুদ্ধ জীবনের দিন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে খুলনা শহরে পাকসেনাদের শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাজাকারদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে হাজী মহসীন রোডের অধিবাসী মো: মনিরুজ্জামান মনি (পরবর্তীতে খুলনা সিটি কর্পোশেনের মেয়র) এর সাথে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ সীমান্ত পার হয়ে ভারতে যান। নদীর ঘাটে মো: আবু জাফর (পরবর্তীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার) এর সাথে তাদের দেখা হয়। কাছেই বিএলএফ’র হেডকোয়ার্টার, সেখানে শেখ কামরুজ্জামান টুকু ও শেখ আব্দুস সালামের সাথে সাক্ষাৎ হয়। তারা তাদেরকে টাকি ক্যাম্পে কয়েকদিন অবস্থান করার পরামর্শ দেন।
এখানে খুলনার আরও কয়েকজন যুবক উপস্থিত হলে সবাইকে একসাথে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টে আনা হয়। সেখান থেকে দমদম বিমানবন্দর হয়ে বিমানযোগে দেরাদুনের শাহারানপুর বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে আসে।
প্রশিক্ষণকালীন সময়ের বর্ণনা দিতে যেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শাহজাহান বলেন, হিমালয় পর্বতের ১৪ হাজার ফুট ওপরে টা-ুয়া ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ হয়। প্রশিক্ষণ শেষে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্টে ফিরে কয়েকদিন পর অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বৃহত্তর খুলনা মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে পাইকগাছা থানার পাতড়াবুনিয়া বিএলএফ সদর দপ্তরে উপস্থিত হন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পাইকগাছা থানার কপিলমুনিতে রাজাকার ক্যাম্প দখলের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
বর্ণনায় তিনি উল্লেখ করেন, যুদ্ধ জীবনে কপিলমুনি তার কাছে স্মরণীয়। পরবর্তীতে ১৪-১৭ ডিসেম্বর গল্লামারীতে অবস্থিত রেডিও সেন্টারে পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে সার্কিট হাউজে এসে বিজয়োল্লাস করেন। দেশের স্বাধীনতার পর ঘরে ফিরে আসেন এবং সমাজসেবায় সম্পৃক্ত হন।