খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

হা‌জিদের আজ মিনায় অবস্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনা মহামারির মধ্যে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৌদি আরবে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। বহির্বিশ্বের কেউ সুযোগ না পেলেও সৌদিতে থাকা ১৫০টি দেশের নাগরিকসহ অংশ নিচ্ছেন ৬০ হাজার মানুষ।

হজের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা নগরীতে আসতে শুরু করেন হজযাত্রীরা। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে চারদিক। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে- লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমূলক লা শারিকা লাক’। হজের প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে হাজিরা ইতিমধ্যে কাবার তাওয়াফ (তাওয়াফ কুদুম) শুরু করেছেন। এরপর তারা সাফা-মারওয়া সাহী করছেন।

পবিত্র হজ পালন করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রথ‌মে পৌঁছা‌বেন মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মিনায়। সেখানে রবিবার তারা অবস্থান করবেন। হজের অংশ হিসেবে তাঁরা পাঁচ দিন মিনা ছাড়াও আরাফা, মুজদালিফা ও মক্কায় অবস্থান করবেন।

আগেই প্রত্যেক হজযাত্রীকে নিজ নিজ মোয়াল্লেম কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কখন মিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হবে। একইভাবে মিনা, আরাফাত, মুজদালিফায় কীভাবে ও কখন রওনা হবেন, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয় আগেভাগে।

মিনার যেদিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। চৌচালা ঘরের মতো এসব তাঁবুতে থাকবেন হজযাত্রীরা। এ সময় মিনায় আগুন জ্বালানো নিষেধ। কারণ, এতে তাঁবুতে আগুন লেগে যেতে পারে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসব তাঁবুতে আছে বাতি। পাশেই আছে গোসলখানা ও বাথরুমের ব্যবস্থা।

হজের পাঁচ দিন ছাড়া মিনা খালি পড়ে থাকে। চারপাশের প্রবেশদ্বারও তখন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানির লাইন, টেলিফোন সংযোগ। হজের দুই দিন আগে মিনা এলাকার ফটক খোলা হয়। হজের দুই দিন পর আবার সব বন্ধ করে দেওয়া হয়।

৮ জিলহজ মিনায় সারাদিন এবং ৯ জিলহজ (১৯ জুলাই) ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। এ দিনকে আরাফা দিবস বলা হয়। এদিন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন কাবার মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বানদার বালিলাহ। বাংলাসহ ৯টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হবে এটি।

৯ জিলহজ সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন তাঁরা। মিনায় এসে বড় শয়তানকে পাথর মারা, দমে শোকর বা কোরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে হালাল হয়ে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাহী করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।

হজ সম্পাদনে এবার মুসল্লিদের ব্যবহার করতে হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। সৌদির স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা থেকে মক্কায় পৌঁছেছেন এবার অনুমতি পাওয়া হজযাত্রীরা।

মক্কা-মিনা-আরাফা-মুজদালিফা-মিনায় চলাচলে হাজিদের জন্য আগেই প্রস্তুত রাখা হয় তিন হাজার বাস। রয়েছে ৫১টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। ৫৯৪ চিকিৎসক ছাড়াও আছেন আরও ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মী। হাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনা ছাড়া অন্য কোনো রোগ আছে কিনা তাও পর্যালোচনা করা হয়েছে। এমনকি হাজিদের খাবারেও রয়েছে ভিন্নতা। আগেভাগেই খাবার প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্ধারিত ৪টি অভ্যর্থনা গেটের মাধ্যমে প্রবেশ করতে হবে কাবা শরীফে। প্রথমবারের মতো হাজী এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য অত্যাধুনিক স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। হজে আসা ব্যক্তিদের জন্য চারটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র আল জাইদি, আল নাসিম, আল শারায়েই এবং আল নুরিয়া গেট ছাড়া মসজিদুল হারামে অন্য কোনো স্থান দিয়ে প্রবেশের সুযোগ নেই। স্মার্ট কার্ড ছাড়া কেউ ক্যাম্পেও প্রবেশের সুযোগ পাবেন না।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!