কঠোর লকডাউনের প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত জীবননগর উপজেলার সহাস্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ক্ষতির মুখে তাদের অনেকেই এখন ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন ।
উপজেলার জীবননগর বাজার এবং উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা, মাছ ব্যবসায়ী, মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী, চা-পান-সিগারেট বিক্রেতারা সহ ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে তৈরি পোশাক, ছিট কাপড়, টেইলার্স, জুতা, ক্রোকারিজসহ বিভিন্ন আইটেমের প্রায় সহস্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গুলো মহামারি করোনায় স্থির হয়ে পড়েছে। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই সকল ব্যবসায়ীরা।
বিক্রি না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাদের দেনার পরিমাণ। সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও কোন সুবিধা পাননি এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্যাকেজ বা ঋণ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন তারা।
পরিবারের তিনবেলা খাবার জোটাতে ঝুঁকি নিয়েও কেউ কেউ দোকান খুলে এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তবে ঠিকমতো বেঁচাকেনা না হওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে এসব স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার সদরে ফুটপাতে একজন ফল বিক্রেতা জানান, ধার-দেনা ও এনজিও থেকে সুদে টাকা এনে তিনি এ ব্যবসা শুরু করছেন। কঠোর লকডাউনের কারণে তার ব্যবসার অবস্থা তেমন একটা ভালো না। বাজারে কোন লোকজন নাই। যে ফল বিক্রির জন্য ক্রয় করে এনেছি তা বিক্রি করতে না পারায় পঁচে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমার পরিবারের কেউ এই মুহূর্তে অসুস্থ হলে চিকিৎসা করার সামর্থ্য আমার নেই । ফল বিক্রির আয় দিয়ে তার ছয় জনের সংসার চলে। এখন ফল তেমন একটা বিক্রি না হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে।
বাস স্টেশনের চা বিক্রেতা মুহিদুল বলেন, ছোট্ট একটা চা-বিস্কুটের দোকান থেকে আয় রোজগারই আমার একমাত্র সম্বল। লকডাউনে দোকানটি বন্ধ থাকায় এখন অর্ধহারে অনাহারে আমাদের দিন কাটাতে হয়।
পান বিক্রেতা রহমান বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৮০ টাকা বিক্রি করেছি, মনে হয় না খেয়েই মরতে হবে ।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর ইসলাম বলেন, কারো পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি