খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  দাবদহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ৫ দিন, খুলবে ২৮ এপ্রিল

২৫ মণের ব্রাহামা ষাড়ে স্বপ্ন বুনছেন হতদরিদ্র বিশ্বজিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

ব্রাহামা জাতের ষাড় তিন বছরেই ওজন হয়েছে ২৫ মন। কালো ও বাদামী রংয়ের বিশালাকৃতির এই ষাড়ের দাম হাকা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। ৯ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট উচ্চতার এই গরু দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে লালন-পালন করা বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দরিচড় মালিপটন এলাকার বিশ্বজিত বৈরাগীর লালন পালন করেছেন ষাড়। তিন বছর ধরে শুধু কাঁচাঘাষ, খড়কুটো, ধান ও ভূষি খাইয়ে বড় করেছেন ষাড়টিকে। খাবারের পাশাপাশি দুই বেলা গোসল ও গোয়ালে বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে ষাড়ের জন্য। বিশ্বজিতের সাথে স্ত্রী সবিতা বৈরাগী ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে শিউলি বৈরাগীর দিন কাটে গরুর যত্ন করে।

বিশালাকৃতির এই ষাড় নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন তারা। দাম হেকেছেন ১০ লক্ষ টাকা। প্রতিদিন ষাড়টিকে দেখতে বিশ্বজিতের ভীড় জমাচ্ছেন স্থানীয়রা। তাদের চাওয়া গরু বিক্রির টাকায় স্বচ্ছালতা আসবে বিশ্বজিতের পরিবারে।

স্থানীয় মোঃ আইয়ুব আলী খান বলেন, বিশ্বজিতের গরু দেখতে প্রতিদিনে অনেক লোক আসে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই গরুর যত্নে কাটে বিশ্বজিতের পরিবারের। বিশ্বজিত ভাল দামে এই গরুটি বিক্রি করুক এটাই আমাদের আশা।

মালতী বাওয়ালী নামের এক নারী বলেন, সারাদিন বিশ্বজিত ও সবিতার পাশাপাশি তাদের মেয়ে শিউলি বৈরাগী গরুর জন্য খুবই কষ্ট করে। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিউলির সব চিন্তা ভাবনা থাকে এই গরু নিয়ে। নিজেরা খেতে না পেলেও কখনও গরুকে না খাইয়ে রাখেনা বিশ্বজিত। গরুটি ভালদামে বিক্রি করতে পারলে হয়ত বিশ্বজিতের পরিবারে স্বচ্ছলতা আসবে।

স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থী শিউলি বৈরাগী বলেন, ৮-৯ বছর ধরে আমরা গরু পালন করি। কিন্তু এবারই আমাদের সব থেকে বড় গরু হয়েছে। বাবা অসুস্থ, বাইরে কাজ করতে পারেন না। অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চলে। ঠাকুরের কৃপায় এবার গরু বিক্রি করে আমাদের সংসারে স্বচ্ছলতা আসবে। আমি ভালভাবে পড়াশুনা করতে পারব।

গরুর মালিক বিশ্বজিত বৈরাগী বলেন, তিন বছর আগে আমার আতালে (গোয়ালে) নিজের গাভীতে ষাড়টি জন্ম হয়। খুবই যত্নে বড় হয়েছে সে। সকালে এক কেজি ভূষি ও এক কেজি ধান খেয়ে দিন শুরু হয়। এরপরে সারাদিন খড়-কুটো ও কাঁচা ঘাষ খেয়েই দিন কাটে ।

সারাদিনই আমার মেয়ে শিউলি ও স্ত্রী সবিতাই এই গরু সামলায়। গরুটাকে ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে পারলে ঘরটাকে সংস্কার করব। মেয়ে ও স্ত্রীকে উপহার দেওয়ার আশাও ব্যক্ত করেন হতদরিদ্র বিশ্বজিত।

বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ লুৎফার রহমান বলেন, ইদুল আজহা উপলক্ষে বাগেরহাটে খামারী ও পারিবারিক পর্যায়ে অনেক গরু পালিত হয়েছে। কচুয়ার বিশ্বজিত বৈরাগী নামের এক ব্যক্তির অনেক বড় একটি গরু রয়েছে। গরুটিকে কোন প্রকার হরমন ও স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়নি। গরুটির ওজন ২৫ মনের বেশি। আশাকরি সে ভাল দামে বিক্রি করতে পারবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!