খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল

হরিষখালী বেড়িবাঁধে ফের ভাঙন, টিকে থাকার লড়াইয়ে এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে হরিষখালীর স্লুইস গেটের পশ্চিম অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধের প্রায় ১৫০ ফুট এলাকা জুড়ে নদীগর্ভে চলে যায়। হঠাৎ বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবরে খোলপেটুয়া নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারি জনসাধারণের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সংবাদ কর্মী মাসুম বিল্লাহ জানান, সোমবার রাতে প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিষখালী স্লুইস গেট সংলগ্ন এলাকায় পাউবো’র বেড়িবাঁধে হঠাৎ করে ভাঙ্গন দেখা দেয়। মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ’ স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করে। বেড়িবাঁধের ল্যান্ড সাইডে বাঁধের স্লোবের গা ঘেঁষে নতুন করে মাটি দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রাণ পণ চেষ্টা করে গ্রামবাসী। এভাবে গভীর রাতের জোয়ার পর্যন্ত বাঁধের ভাঙন কোন রকমে ঠেকিয়ে রাখা হয়। কিন্তু বাঁধের ভাঙনের যে অবস্থা তাতে যে কোন মূহুর্তে পুরো বাঁধ নদী গর্ভে ধ্বসে পড়তে পারে। এখনি নদী ভাঙন রোধে জরুরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করলে মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদারসহ পাউবো’র কর্মকর্তাবৃন্দ ভাঙন পয়েন্টটি পরিদর্শন করেন। স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সেখানে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করছেন।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী জানান, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ নম্বর পোল্ডারের হরিষখালীর স্লুইস গেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধে সোমবার রাতে হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দেয়। সাথে সাথে মাইকিং করে গ্রামবসাীদের সাথে নিয়ে রাতভর কাজ করে ভাঙন কোন রকমে ঠেকিয়ে দিতে পেরেছি। দ্রুত কাজ করায় লোকালয়ে নদীর পানি ঢুকতে পারেনি। পাউবো কর্তৃপক্ষ আরো আগে কাজ শুরু করলে এই বাঁধ আর ভাঙতো না। ভাঙন রোধে হরিষখালী এলাকায় কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ভাঙন রোধে একজন ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঠিাকাদারের গাফিলতির কারণে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চার হাজার বস্তা ভর্তি করে গণনা করে রাখলেও মাত্র ত্রিশটি বস্তা ভাঙন পয়েন্টে ডাম্পিং করা হয়। বস্তা ডাম্পিং বিলম্বের কারণে ভাঙনটি বড় আকার ধারণ করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ করেন। দ্রুত বাঁধটি সংস্কার করতে না পারলে পূর্বের ন্যায় আবারও প্লাবিত হতে পারে পুরো প্রতাপনগর ইউনিয়ন।

ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা পাউবো’র সেকশনাল অফিসার (এসও) আলমগির কবির জানান, পাউবো’র ৭/২ নম্বর পোল্ডারের হরিষখালীর ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ সংষ্কারের ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাহি গ্রুপকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ঠিকারদার অনেক আগে থেকেই সেখানে কাজ করছেন। ভাঙন পয়েন্টে রিভার সাইড প্রটেশানের জন্য বালির বস্তা প্রস্তুু করা রয়েছে। কিন্তু বস্তা ফেলার আগে হঠাৎ করে সোমবার রাতে সেখানে বেড়িবাঁধে ধ্বস নামে। আমরা ঠিকাদারকে সাথে নিয়ে সেখানে কাজ করছি। রিভার সাইডে বস্তা ডাম্পিংয়ের পাশাপাশি ভাঙন পয়েন্টের ভিতর দিয়ে একটি বিকল্প রিংবাঁধ ও নির্মাণ করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, প্রতাপনগর ইউনিয়নে হরিষখালী স্লুইস গেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ রক্ষায় রিভার সাইডে বস্তা ডাম্পিং করার জন্য একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকাদার সেখানে কাজ করছেন। ‘এটা বাঁধে ভাঙন নয়, এটি হচ্ছে নদী ভাঙন’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বেড়িবাঁধে ভাঙন হলে সেটি দ্রুত মেরামত করা যায়। কিন্তু নদী ভাঙন হলে সেটি রক্ষা করা খুবই মুশকিল হয়ে পড়ে। আমরা নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধের রিভার সাইডে বালির বস্তা ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করেছি। সাথে সাথে ভাঙন পয়েন্টে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণেরও কাজ চলছে। স্থানীয় জনগণ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে যথেষ্ট সহযোগিতা দিচ্ছে আশাকরছি কোন সমস্যা হবে না।

খুলনা গেজেট/ বিএমএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!