খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা শিশু হাসপাতালে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট
  রাজধানীর খিলগাঁওয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  জাতীয় পতাকার নকশাকার, জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
  বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কোন মামলা নেই : প্রধানমন্ত্রী
  জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্র
হত্যার মোটিভ উদ্ধারে একাধিক ক্লু নিয়ে এগোচ্ছে সিআইডি

কলারোয়ায় আলোচিত ফোর মার্ডারের সাথে জড়িত পরিচিত কেউ

রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চার সদস্য হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখনও সুনির্দিষ্ট কোন ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আসামী নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি পুলিশ। এদিকে মামলার সংশ্নিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হত্যাকান্ডেরে মোটিভ উদ্ধারে একাধিক ক্লু নিয়ে এগোচ্ছেন তারা।

আলোচিত এই হত্যাকান্ডে চেনা-জানা কেউ জড়িত বলেই ধারণা স্থানীয় ও নিহতের স্বজনদের। অপরিচিত কেউ হলে দরজা খুলতো না নিহত শাহিনুর। জমি-জমা, মাছের ব্যবসায় প্রভাবশালী কারও সঙ্গে বিরোধ অথবা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। হত্যাকারীরা প্রথমে শাহিনুরকে হত্যা করে পরে শাহিনুরের স্ত্রী বিষয়টি জানতে পারায় হয়তো তাকেও হত্যা করে। পরে পিতা-মাতাকে হত্যার সময় হত্যাকারীদের চিনতে পারায় দুই শিশুকেও হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছেন তারা। তবে হত্যাকান্ড দেখে পেশাদার খুনি বলে মনে হচ্ছে না। শাহিনুর রহমানকে পা বেঁধে আলাদা একটি ঘরে হত্যা করা হয়েছে। দুই বাচ্চা ও মাকে আলাদা আরেকটি ঘরে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক রায়হানুল ইসলাম এর পাশাপাশি পুলিশ বেশ কয়েজনকে নজরদারিতে রেখেছেন।

এদিকে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর রাতেই মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় সাতক্ষীরা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম না থাকলেও শুক্রবার নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

মামলার তদন্তসংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রায়হানুলের হাতে ধারালো অস্ত্রের কাটা চিহ্ন পাওয়া গেছে। মনে হচ্ছে, ওই রাতেই এটি ঘটেছে। ওইদিন কীভাবে তার হাত কেটেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রায়হানুলের ওপর সন্দেহের এটি অন্যতম কারণ। প্রতিবেশী আকবরের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। আমরা অনেকগুলো ক্লু নিয়ে এগোচ্ছি। আটক রায়হানুল ইসলামকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার ৫দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মামলা সিআইডি তদন্ত করছে। কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে এ মামলার আসল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানা সম্ভব হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।

নিহত শাহিনুরের বোন আছিয়া খাতুন বলেন, আমার ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে এই হত্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এ ঘটনায় সে জড়িত থাকতে পারে না। কারা আমার বড় ভাই, তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছে তা পুলিশকেই খুঁজে বের করতে হবে।

নিহত শাহিনুরের মা শাহিদা খাতুন বলেন, আমার শাহিনুর কোনও ঝামেলায় যেতো না। কেন এভাবে তাকে মারা হলো। আমি আমার সন্তান, বৌমা, আদরের দুই নাতিকে হারিয়েছি। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। এ ঘটনার সঙ্গে আমার ছোট ছেলে রায়হানুল জড়িত থাকতে পারে না। দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো গোলযোগ ছিল না। তাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। তাকে বিনা দোষে ফাঁসানো হচ্ছে। কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে হবে।

প্রসঙ্গতঃ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোররাতে কোন একসময় দুর্বৃত্তারা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের মৃত শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক শাহিনুর রহমানের ঘরে ঢুকে মোঃ শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ৯ বছরের শিশু ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও ৬ বছরের শিশু কন্যা তাসমিন সুলতানাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। রাতে নিহত শাহিনুরের শাশুড়ি ময়না খাতুন বাদি হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা (নং ১৪) দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডি পুলিশকে। ঘটনার দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় নিহতের ছোট ভাই রায়হানুলকে। পরের দিন রায়হানুলকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!