খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
  কিশোরগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী

সুনীল অর্থনীতিকে কাজে লাগাতে পারলে রুপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন সহজতর হবে

জিয়াউর রহমান, পিএমপি

বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির বিষয়টি দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সমুদ্রের রং নীল আর সেকারণেই সমুদ্র কেন্দ্রীক পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে বলা হয় সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমি। বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, সমুদ্রে যে পানি আছে এবং এর তলদেশে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে সেই সব ধরনের সম্পদকে টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করাকেই বলা হয় ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি।

পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হচ্ছে সমুদ্র। মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ, যাত্রী এবং মালামাল পরিবহণের একটি দক্ষ মাধ্যম হিসেবে, তেল ও গ্যাসসম্পদ আহরণ ক্ষেত্র হিসেবেও সমুদ্র ব্যবহ্নত হয়। এছাড়া সমুদ্রে নানা ধরনের প্রাকৃতিক খনিজসম্পদ যেমন লবণ, বালি, গ্রাভেল, কপার এবং কবাল্ট ইত্যাদি পাওয়া যায়। সমুদ্র কেন্দ্রিক এসকল উপাদানের সামষ্টিক রুপই হলোব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি। সুনীল অর্থনীতির মূল লক্ষ্যে বা উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করা, সামাজিক পুঁজি সৃষ্টি করা, আয় বাড়ানো এবং সর্বোপরি পরিবেশে সঞ্চয়-বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করা। কেবল সমুদ্রের নিচের অর্থনৈতিক কার্যক্রম নয়; সমুদ্র সম্পদনির্ভর পরিচালিত যে কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কেই বলা হয় ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি। এছাড়া, ব্লু- ইকোনমির উপদান হিসেবে আমরা মৎস্য, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ আহরণকে দেখছি। অধ্যাপক গুন্টার পাউলি ভবিষ্যতের অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়নের জন্য একটি টেকসই এবং পরিবেশ বান্ধব মডেল হিসেবে ১৯৯৪ সালে ব্লু-ইকোনমির ধারণা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ব্লু -ইকোনমি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম ২০১২ সালে রিওডিজেনিরো, ব্রাজিলে টেকসই উন্নয়ন শীর্ষক জাতি সংঘ সম্মেলনরিও+২০। ব্রাজিলের রিওডিজেনিরো রিও+২০ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের সামুদ্রিক এলাকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে এবং এর সামগ্রিক উন্নয়নে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য সমুদ্রের সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা অপরিহার্য মর্মে গবেষকরা মতামত দিয়েছেন।

জাতিসংঘ ২০১৫ এর মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা নির্ধারণে সুনীল অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেই লক্ষ্যে ২০১৫ সালে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারন করছে যার মূল ভিত্তি হচ্ছে সুনীল অর্থনীতি। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা-১৪-এ বলা হয়েছে টেকসই উন্নয়নের জন্য সমুদ্র এবং সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। সুনীল অর্থনীতির বাস্তবায়নের মূলভিত্তি হচ্ছে টেকসই সুমদ্র নীতিমালা প্রণয়ন। কেননা বর্তমানবিশ্ব অর্থনীতিতে সুনীল অর্থনীতি বিভিন্নভাবে অবদান রেখে চলেছে। সমুদ্রকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাণিজ্যে প্রতি বছর প্রায়৩ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য সংঘটিত হয়। বর্তমান পৃথিবীর প্রায় ৬৩০ কোটি মানুষের ১৫ শতাংশ প্রোটিন চাহিদার জোগান দিচ্ছে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি যথা সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু।পৃথিবীর ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ্বালানী তেল সরবরাহ হচ্ছে সমুদ্রতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক আমদানি রফতানির ৬০ ভাগ হয়ে থাকে সমুদ্রপথে।বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৮০% সমুদ্র পরিবহনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বৈশ্বিক গ্লোবাল পর্যটন শিল্প এবং প্রকৃতিনির্ভর পর্যটন শিল্পের বিকাশে সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমুদ্র আমাদের পৃথিবীর প্রায় ৭২% এবং বায়োস্ফেয়ারের প্রায় ৯৫% এলাকা ঘিরে রয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহ করা, কার্বন-ডাই অক্সাইড শোষণ করা, পুনরুদপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহ করা, পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জলবায়ুর ভারসাম্যতা রক্ষা করা ইত্যাদি নানাবিধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদ আমাদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে সহায়তা করে। নতুন নতুন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আহরিত খনিজ সম্পদ থেকে বায়োপ্রোসপেকটিং সরবরাহের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে সমুদ্র। উপরন্তু বিশ্বে মোট হাইড্রোকার্বনের ৩২% সরবরাহ হয় সামুদ্রিক উৎস্য থেকে। সমগ্র বিশ্বে ক্রমশই ব্লু-ইকোনোমিজনপ্রিয় হচ্ছে কেননা পৃথিবীর সিংহভাগ মানুষের খাবার এবং জীবনযাত্রা নির্ভর করে সমুদ্রের ওপর।

জনসংখ্যা পরিসংখ্যানের তথ্যমতে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৯০০ কোটি। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে একটি অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, অনিশ্চিত অর্থনৈতিক অবস্থা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ক্রমাগত প্রতিযোগিতার মুখে ২০৫০ সালের মধ্যে ৯ বিলিয়ন মানুষের আহার যোগাড়ের ব্যবস্থা করা। বর্তমান পৃথিবীতে বিদ্যমান এই সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে সমুদ্র সম্পদ বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে মর্মে গবেষকরা মতামত দিয়েছেন। গবেষকরা মতামত দিয়েছেন, এ বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও জ্বালানি চাহিদা পূরণের একমাত্র ক্ষেত্র হতে পারে সমুদ্র সম্পদ যার ফলে বিশ্বের এই বিপুল জনগোষ্ঠির ভবিষ্যৎ খাদ্য ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বিশ্বের নজর এখন সমুদ্র তলদেশে সঞ্চিত সম্পদের ওপর। এ ছাড়া সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে সমুদ্রনির্ভর ওষুধশিল্পও গড়ে তোলা সম্ভব মর্মে গবেষকরা মতামত দিয়েছেন।

বিশ্ব পরিমন্ডলে ব্লু-ইকোনমির গুরুত্ব অনুধাবন করা যায় বিগত বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন পর্যালোচনা করে।বিগত বছরগুলোতে যতগুলো আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়েছেতার সবগুলোর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ব্লু-ইকোনমি । ২০১২ সালে রিও+২০, সমুদ্র বিষয়ক এশীয় সম্মেলন-২০১৩ সালে বালিতে অনুষ্ঠিত খাদ্য নিরাপত্তা এবং ব্লু গ্রোথ ইত্যাদি সম্মেলনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। OECD (অর্থনৈতিক সহায়তা এবং উন্নয়ন সংস্থা ), জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP), WB (বিশ্ব ব্যাংক), EU (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন)সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উন্নয়ন কৌশলের মূলেও রয়েছে ব্লু-ইকোনোমি। আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট বড় দেশ ব্লু-ইকোনোমি নির্ভর উন্নয়ন কৌশল প্রণয়ন করছে।পৃথিবীর অনেক দেশ বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় আয়ের বেশির ভাগ অবদান রাখছে সমুদ্র অর্থনীতি। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি এমনকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা গেলে সমুদ্র থেকে আহরিত সম্পদের মূল্যমান হবে তাদের জাতীয় বাজেটের প্রায় দশগুণ। ইন্দোনেশিয়ায় ‘The Lombok Blue Economy Implementation Programme’ এরসফলবাস্তবায়নেরমাধ্যমে ৭৫,০০০ লোকের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিসহ প্রতিবছর ১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভবপর হবে মর্মে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সামুদ্রিক সম্পদের উৎকর্ষসাধন ও পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে বছরে আয় করছে প্রায় ৪৭.২ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার যা তাঁদের মোট জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশের বেশী এবং দেশটি ইতিমধ্যে ২০১৫-২০২৫ সাল পর্যন্ত ব্লু -ইকোনোমিক দশক পরিকল্পনা করেছে । দেশটি আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেঅর্থনীতিতে ব্লু-ইকোনমির অবদান হবে প্রায় ১০০ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ানডলার।গত ৫ বছর সময়ে চীনের অর্থনীতিতে ১.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রি বৃদ্ধি পেয়েছে যা চীনের মোট জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ। এছাড়া, চীন ব্লু-ইকোনমি কেন্দ্রিক যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তা সফল বাস্তবায়ন হলে আগামী ২০৩৫ সাল নাগাদ জিডিপিতে মেরিন সেক্টরের অবদান হবে প্রায় ১৫ শতাংশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ব্লু-ইকোনমি হতে বাৎসরিক গ্রোস মূল্য সংযোজন ৫০০ বিলিয়ন ইউরো এবং৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সু্যোগ তৈরি করেছে।আয়ারল্যান্ড ২০১৬ সালে ব্লু-ইকোনমির মাধ্যমে বাৎসরিক গ্রোস মূল্য সংযোজন ছিল ৩.৩৭ বিলিয়ন ইউরো যা তাঁদের জিডিপির ১.৭ শতাংশ। মরিশাসে ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল সময়ে জিডিপিতে ব্লু-ইকোনমির অবদান ছিল গড়ে ১০ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সালে ব্লু-ইকোনমির অবদান ছিল ৩৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা তাঁদের মোট জিডিপির ২ শতাংশ এবং ৩ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া, জাপান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ ভারত মহাসাগরের অনেক দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে সুনীল অর্থনীতি।

বাংলাদেশের জন্য সমুদ্রে উন্মুক্ত অধিকার বিশাল সুযোগ যা আন্তর্জাতিক ব্যবসায় ও বাণিজ্যের বিস্তারের পাশাপাশি সামুদ্রিক সম্পদের ব্যাপ্তি ও বৈচিত্র্যেও বাংলাদেশের অধিকারকে আরো বিস্তৃত করে।

বঙ্গোপসাগরের সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিবেচনায় রেখে সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে সমুদ্র বিজয় অভিযাত্রার সূচনা করেন। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদের ২ নম্বর ধারা অনুযায়ী সমুদ্র অঞ্চলের সীমা নির্ধারণ, সমুদ্র সীমানায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সমুদ্রসম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে সর্বপ্রথম ‘দি টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স এ্যান্ড মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেন।পরবর্তী সময়ে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৭৪ সালের আইনটি প্রয়োজনীয় সংশোধনপূর্বক ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইমজোনস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২১’ প্রণয়নকরে। ওই বিলে ‘ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল অবদ্যসি (আনক্লোস, ১৯৮২)’ ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন এবং সমুদ্রসীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত মামলার রায়ের যথাযথ প্রতিফলন ঘটানো হয়।

প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়নামার ও ভারতের সাথে যথাক্রমে ২০১২ ও ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্র-সীমা বিরোধের চুড়ান্ত রায়ে বাংলাদেশ তার এলাকাভুক্ত সমুদ্রের অংশ,বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মহীসোপান সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের সমপরিমাণ টেরিটোরিয়াল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মূলভূখণ্ডের ৮০ দশমিক ৫১ শতাংশ। সমুদ্র বিশ্লেষকরা মতামত দিয়েছেন সমুদ্র বিজয় মূলতঃ জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ বজায় রেখে সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নত জীবিকা এবং কর্মসংস্থানের এক নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে। গবেষকরা মনে করেন, ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ। দেশের স্থলভাগের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা এখন মূল্যবান সম্পদের ভান্ডার। এসব সম্পদ ও সম্ভাবনার যথাযথ ব্যবহারে সামুদ্রিক অর্থনীতি বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে মর্মে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। সমুদ্র নির্ভর ব্লু-ইকোনমির সফল পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে এবং বিশাল সমুদ্রসীমা থেকে ব্যাপকভিত্তিক সম্পদ আহরণ করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করা যাবে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং মহীসোপান প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর তাই টেকসই উন্নয়নকে বিবেচনায় রেখে উন্নত বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জন করতে সুনীল অর্থনীতিকে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবসম্মত মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের জিডিপিতে সুনীল অর্থনীতির এ অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমাদের প্রয়োজন হবে সামুদ্রিক সম্পদের অনূসন্ধান ও উন্নয়ন, সমুদ্র ও উপকূলীয় স্থানের যথোপযুক্ত ব্যবহার, সামুদ্রিক পণ্যের ব্যবহার, সামুদ্রিক কর্মতৎপরতার সমর্থনে পণ্য ও সেবা সহায়তাদান এবং সামুদ্রিক পরিবেশের সুরক্ষা করা।

বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্লু ইকোনমির অবদান (গ্রস ভ্যালু এডেড) মাত্র ৯.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা মোট অর্থনীতির মাত্র ৬ শতাংশ। সমুদ্র সম্পদ যথা গ্যাসসহ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবছর আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা সম্ভব মর্মে অর্থনীতিবীদরা মতামতদিয়েছেন। ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংক এর ‘টুয়ার্ডস এ ব্লু ইকোনমি: এ পাথওয়ে ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সমীক্ষাতে বলা হয়েছে, সমুদ্র অর্থনীতির ব্যাপারে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রকার সমন্বিত নীতি পরিকল্পনা করা হয়নি। ব্লু-ইকোনমির সঠিক বাস্তবায়ন করা কিছুটা সময়ের ব্যাপার এবং এ বিষয়ে প্রয়োজন বিদেশি সহায়তাসহ সঠিক মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা। আমরা যথাযথউন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে যদি সমুদ্রসম্পদকে কাজে লাগাতে পারি, তবে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা জাতীর পিতার স্বপ্নের সোনার সমৃদ্ধশীল উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।

সুনীল অর্থনীতির কার্যক্রম বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যথা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তর সমুদ্র সম্পদ আহরণে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কর্মপন্থা, পদক্ষেপ গ্রহণ এবং কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে সরকার সুনীল অর্থনীতির উন্নয়ন কাজ শুরু করে। পটুয়াখালীতে পায়রা সমুদ্র বন্দর এর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে; সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে; সামুদ্রিক মৎস্য খাতে বিশেষ করে টেকসই আহরণ ও সংরক্ষণে অতিরিক্ত উন্নয়ন কাজগ্রহণ করা হয়েছে।

সমুদ্রতল দেশের মৎস্য মজুদের ওপর চাপ কমানো, সমুদ্রতলের জলজ সম্পদের ক্ষয়হ্রাস এবংমধ্যবর্তী পানিরম ৎস্য আহরণ সুবিধার জন্য বেশ কিছু সংখ্যক‘বটম-ট্রল’-কে ‘মিডওয়াটার-ট্রল’ এ রুপান্তরিত করা হয়েছে। বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মাছের, বিশেষ করে ইলিশ মাছের বাছাই ও প্রজনন সুবিধার জন্য মাছ ধরার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর অধীনে তিমি, ডলফিন, সামুদ্রিক কচ্ছপ, হাঙ্গরসহ অপরাপর সামুদ্রিক প্রজাতির সুরক্ষাদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালে ‘সোয়াচ অব নোগ্রাউন্ড’ (সমুদ্রের তলবিহীন অংশ) কে দেশের প্রথম সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে। পরিবেশ খাতে জীব বৈচিত্র, সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজনন ও সংরক্ষণ এবং ম্যাংগোভ পুনরুদ্ধার ও পুনবর্ধনসহ নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণি জাতের আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন উপকূলীয় ইকো-পরিবেশে কয়েকটি ‘পরিবেশগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা’ বলবৎ করা হয়েছে। উপকূলীয় ও সামুদ্রিক গবেষনার জন্য জাতীয় সমুদ্র বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এনওআরআই) স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে জল বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় জরিপে নেতৃত্ব দানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীরকার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিফ হাইড্রোগ্রাফার মর্যাদার একটি অফিসার পদ তৈরি করা হয়েছে।সুনীল অর্থনীতির জন্য জ্ঞান ও কৌশল শক্তিশালী করতে আর্ন্তজাতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হচ্ছে।বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সহযোগিতা এবং সমুদ্রভিত্তিক সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নসহ ভবিষ্যৎ সহযোগিতার জন্য কর্মপন্থা নিরুপণ কল্পে নিবিড়ভাবে কাজকরার লক্ষ্যে ২০১৭ এর জুনে ভারতের সাথে একটি সমঝোতা-স্মারকপত্র স্বাক্ষরিত হয়। সুনীল অর্থনীতির বিকাশ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতার জন্য চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আলোচনাও এগিয়ে চলেছে। প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় শক্তিশালী করার অংশ হিসেবে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ এবং এর যথাযথ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সরকার ২০১৪ সালে ২৫-সদস্য বিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে যার আহ্বায়ক হচ্ছেন প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব। ইতিমধ্যে সরকার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে২০১৭ সালেএকটি ‘সুনীল অর্থনীতি সেল’ স্থাপন করেছে। এছাড়া সমুদ্র সম্পদ সুরক্ষায় সরকার ২০১৯ সালে মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট করেছে। সুনীল অর্থনীতির সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে দক্ষ মানবসম্পদ গডে তোলা এবং এ সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন ও তা বিকাশে দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Maritime University Bangladesh নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে , ও শানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবংঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে Oceanography বিভাগ চালু করা হয়েছে। সরকার সামুদ্রিক অর্থনীতির বিকাশের জন্য ২৬টি সম্ভাবনাময় কার্যক্রম চিহ্নিতকরেছে।

সুনীল অর্থনীতি খাতের উন্নয়নকে বেগবান করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক, বাণিজ্যিক ও পরিবেশগত প্রেক্ষাপট বিশ্নেষণ পূর্বক সুনির্দিষ্ট ৯টি খাত যথা-

১. সামুদ্রিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা;

২. সামুদ্রিক মৎস্য চাষ উন্নয়ন;

৩.বাণিজ্যিক নৌপরিবহনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন;

৪. সমুদ্র ভ্রমণ পর্যটনের বিকাশ সাধন;

৫. অফশোর জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সুনীল বায়োটেকনোলজি গবেষণা ও উন্নয়ন;

৬. স্থিতিশীল জীবিকার জন্য ম্যানগ্রোভের বাস্তুসংস্থান গত বিভিন্ন সেবা নিশ্চিতকরণ;

৭. জাহাজ নির্মাণ ও রিসাইক্লিং শিল্প সম্প্রসারণ;

৮. সামুদ্রিক দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;

৯. মেরিন স্পেশাল প্ল্যানিং বাস্তবায়ন চিহ্নিত করে সেসব খাতের বিকাশ ও বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে।
সুনীল অর্থনীতির সুদূর প্রসারী অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ সরকারকে নিতে হবে আরও  কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত ও সঠিক পরিসংখ্যান করে বিনিয়োগকারীদের এ খাতে কীভাবে আকৃষ্ট এবং এ খাতের উন্নয়ন করা যায়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। প্রযুক্তিনির্ভরতা ও দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ সম্পর্কে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবংদীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় যেসব অনাবিস্কৃত সমুদ্র সম্পদ আছে, সেগুলোর বিজ্ঞান ভিত্তিক ও পরিবেশ বান্ধব সংগ্রহ এবং টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ এর অধীনে সুনীল অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট গবেষণা ও যৌথ বিনিয়োগ অবারিত করতে ভারত, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চলমান উদ্যোগ সমূহ বেগবান করতে হবে। একইসঙ্গে সুনীল অর্থনীতিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন ও পরামর্শ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।সুনীল অর্থনীতির জন্য বিভিন্ন ধরনের দক্ষ কর্মী যথা -উপকূলীয় ও অফ-শোর প্রকৌশলী, নাবিক, বাণিজ্যিক নাবিক, মৎস্য প্রযুক্তিবিদ, জৈব প্রযুক্তিবিদ এবং সামুদ্রিক সম্পদ জরিপকারীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ( সীউইড) চাষ বিস্তারের জন্য অধিকতর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ম্যারিকালচার গবেষণায় অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জলসীমায় অধিকার, শান্তি-শৃঙ্খলা বা নিরাপত্তারক্ষার স্বার্থে আন্তর্জাতিক সীমা লঙ্ঘন আইনের ধারাগুলোর সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

উপকূলীয় পর্যটন শিল্পের বিকাশে নানাবিধ পদক্ষেপ নিতে হবে, বঙ্গোপসাগরের জৈব ও অজৈব সম্পদ রপ্তানি চুক্তি করা; সমুদ্র বিষয়ে মহাপরিকল্পনা, জাতীয় নিরাপত্তা ও সম্পদ উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের জন্য নানাবিধ উদ্যোগ নেয়া; বাংলাদেশের বন্দরে সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ সমূহের ফীডার পরিষেবা কার্যক্রম বাড়ানো।সামুদ্রিক এলাকা হতে প্রাপ্ত প্রধান অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যথা -তেল ও গ্যাস, মৎস্য সম্পদ, ঢেউয়ের শক্তি, জোয়ারের শক্তি, উপকূলীয় বায়ু, লবণের উৎপাদন, সামুদ্রিক তাপ-শক্তি রূপান্তর, সামুদ্রিক খনিজ আহরণ ইত্যাদি সম্পদের আহরণ এবং ব্যবহার নিশ্চিত করতে সমুদ্র অঞ্চলভিত্তিক বিভাজন (ব্লক), ম্যাপিং এবং আহরণযোগ্য সম্পদের পরিমাণ অ্যাসেসমেন্ট করা অত্যন্ত জরুরি।

সমুদ্র নির্ভর সুনীল অর্থনীতিকে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে সুনীল অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।এছাড়া সুনীল অর্থনীতি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিতকরা, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূণতা অর্জন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জলবায়ু  পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলাসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সমুদ্র সম্পদের অপরিসীম ভূমিকা রাখার পাশাপাশি খুলে দেবে বাংলাদেশের অপরাপর সম্ভাবনার দুয়ার। অর্থনীতিবিদদের মতে সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশের জিডিপিতে শতকরা ১০ ভাগ অর্জন করতে সক্ষম হবে। প্রকৃতপক্ষে, সুনীল অর্থনীতি ভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগোর মাধ্যমে‘রুপকল্প-২০৪১’ তথা আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সমৃদ্ধিশালী উন্নত সোনার বাংলা অর্জন সম্ভবপর হবে মর্মে আমরা আশাবাদি।

লেখক: উপসচিব ও কনসালটেন্ট, এটুআইপ্রোগ্রাম

খুলনা গেজেট/ টি আই




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!