খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৯ মার্চ, ২০২৪

Breaking News

  চট্টগ্রামে কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট
  দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়ে বাসে আগুন, নিহত ৪৫
  গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২
জিজ্ঞাসাবাদের পর ডিবি যুগ্ম-কমিশনার

সুইস ব্যাংকে প্রিন্স মুসার বিলিয়ন ডলারের সব তথ্য মিথ্যা!

গেজেট ডেস্ক

সুইস ব্যাংকে থাকা মুসা বিন শমসেরের ওরফে প্রিন্স মুসার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সকল তথ্য মিথ্যা বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ডিবি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এমন তথ্য জানায় ডিবি।

জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুণ-অর-রশীদ সাংবাদিকদের জানান, তাকে রহস্যমানব মনে হয়েছে। তার বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার দাবি অন্তঃসারশূন্য মনে হয়েছে।

তবে অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী আবদুল কাদেরের প্রতারণার দায় মুসা বিন শমসের এড়াতে পারবেন না বলে মন্তব‌্য ক‌রেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, মুসা বিন শমসের প্রতারক কাদেরকে তার আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাকে ২০ কোটি টাকার চেক দিয়েছেন। তাকে ‘বাবা’, ‘সোনা’ বলেও ডাকতেন।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মুসা বিন শমসের দাবি করেছেন তিনি কাদেরের প্রতারণার বিষয়ে কিছু জানেন না। আমরা তাকে বলেছি, একজন নাইন পাস লোককে আপনি না বুঝে কীভাবে নিয়োগ দিলেন, তার থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে কীভাবে লাভসহ ২০ কোটি টাকার চেক দিলেন? এছাড়া মুসা সাহেব কাদেরের সম্পর্কে বেশি জানেন না বললেও আমরা তার সাথে কাদেরের অজস্র কথপোকথন পেয়েছি। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ডাকা হতে পারে বলে জানান হারুন অর রশীদ।

এদিকে সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আলোচিত ধনকুবের মুসা বিন শমসের।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, ভুয়া অতিরিক্তি সচিব আব্দুল কাদেরের প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। শমসের বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাদের একজন মিথ্যাবাদী। আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব, তার বিরুদ্ধে মামলা করব।

আলোচিত এ ধনকুবের বলেন, একজন ফ্রড (প্রতারক) লোক অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে ভুয়া কার্ড ছাপিয়ে আমার অফিসে গিয়েছিল। আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় ছবি তুলেছিল এবং সে মাঝে মাঝে আমার সঙ্গে বসে ঊর্ধ্বতন লোকদের সঙ্গে কথা বলত। তাদের মধ্যে আইজিপি, আর্মির জেলারেলসহ ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলত। আমার বিশ্বাস ছিল যে, সে (আব্দুল কাদের) অতিরিক্ত সচিব। কিন্তু পরে প্রমাণিত হলো, সে অতিরিক্ত সচিব না, সে একজন ভুয়া অতিরিক্ত সচিব। পরে তাকে বের করে দিলাম আমি।

আইন উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে মুসা বিন শমসের বলেন, আব্দুল কাদের মিথ্যা কথা বলেছে। সে আমার আইন উপদেষ্টা ছিল না। প্রতারক আব্দুল কাদেরের সঙ্গে ২০ কোটি টাকার চেকের লেনদেনের তথ্য পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা আমি ফেরত দিয়ে দিয়েছি।

এর আগে, একইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মুসা বিন শমসের, তার স্ত্রী শারমিন চৌধুরী, ছেলে জুবেরী হাজ্জাজ একটি গাড়িতে করে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। প্রতারণার একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়। ডিবির অতিরিক্ত ডিআইজি হারুনুর রশিদ জানান, মুসা বিন শমসের ডিবি কার্যালয়ে আসার পরপরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

আব্দুল কাদের মাঝি নামে এক ব্যক্তি নিজেকে কখনো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবার কখনো কথিত প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের নিয়োগপ্রাপ্ত লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিয়মিত প্রতারণা করে আসছিল। এছাড়া সরকার পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের শত শত কোটি টাকার ঠিকাদারি পেয়েছে বলে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করত সে। সেগুলোর বিপরীতে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে কার্যাদেশ বিক্রি করত। এভাবে প্রতারণা করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছে এই ঠগবাজ আব্দুল কাদের।

গ্রেফতারকৃত আব্দুল কাদেরের সঙ্গে মুসা বিন শমসেরের যোগাযোগ ও লেনদেনের তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ কারণে আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরকে (প্রিন্স মুসা) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়।

সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর কাওরান বাজার, মিরপুর এবং গুলশান থেকে প্রতারক কাদেরসহ চার জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ। গ্রেফতারকৃত অন্য তিন জন হলেন, প্রতারক কাদেরের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী ছোঁয়া, কাদেরের সততা প্রপার্টিজের ম্যানেজার শহিদুল আলম এবং অফিস সহায়ক আনিসুর রহমান।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!