খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
  কিশোরগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো : প্রধানমন্ত্রী
বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত

সীমান্তের ইছামতি নদীতে এবারও ভাসবে না মিলন মেলার তরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীতে সাতক্ষীরার দেবহাটার সীমান্ত নদী ইছামতিতে এবারও ভাসবে না ভারত-বাংলাদেশের মিলন মেলার তরী। বিজয়া দশমীতে ইছামতি নদীর নোম্যান্স ল্যান্ড বরাবর রশি টানিয়ে সীমানা নির্ধারণসহ যাতে কোন দেশের প্রতিমাবাহী ট্রলার আর্ন্তজাতিক সীমারেখা অতিক্রম করতে না পারে সেজন্য থাকবে বিজিবি ও বিএসএফ’র যৌথ টহল।

করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মেনে নিজ নিজ নদী সীমানায় শান্তিপূর্ণভাবে ভারতীয় সময় দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা এবং বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেবে উভয় দেশের মানুষ।

বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ইছামতি নদীর নোম্যান্স ল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ঘণ্টাব্যাপী বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজমুল হুসেইন খাঁন, দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী, বিজিবি’র টাউনশ্রীপুর কোম্পানির নায়েব সুবেদার বন্দে আলী, হাবিলদার মোকতারুজ্জামান, ল্যান্স নায়েক আবুল কামাল এবং ভারতের পক্ষে হাসনাবাদের বি.ডি.ও মোস্তাক আহমেদ, এস.ডি.পি.ও দেবরাজ ঘোষ, হাসনাবাদ পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর কৃষ্ণেন্দু ঘোষ, টাকী পৌরসভার মেয়র সোমনাথ চ্যাটার্জী, বিএসএফ’র এ.সি বিনোদ কুমার, ইন্সপেক্টর সুভাস চন্দ্র, এস.আই পারভীন কুমার সানি, এইচ.সি ইত্তেফাক আহমেদসহ দু’দেশের সিভিল প্রশাসন ও বিজিবি-বিএসএফ’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে গত কয়েক বছর আগেও ইছামতির দু’পাড়ে বাংলাদেশ ও ভারতের লাখো মানুষের উপস্থিতিতে বসতো শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মিলন মেলা। সেসময় বছরে ওই একটি দিনে সীমানার গন্ডি এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে সৌহার্দ ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠতো দু’দেশের লাখো মানুষ। ইছামতি নদীর বুক চিরে ভাসতো বাংলাদেশ ও ভারতের হাজারো নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ। দিনটিতে থাকতো না আইনের কোন বাধ্যবাধকতা। পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই কয়েক ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশ-ভারতের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। বেড়ানো, কেনাকাটা এবং ভিন্ন দেশে থাকা আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করে সন্ধ্যার আগেই সবাই আবার ফিরে যেতো যার যার দেশে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে ইছামতি নদীর বুকে ভেসেছিল এমন সৌহার্দপূর্ণ মিলন মেলার তরী। পরবর্তীতে আইনী জটিলতার কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মিলন মেলা। তবুও প্রতিবছর দুর্গাপূজা আসলেই কাঙ্খিত সেই মিলনমেলার অপেক্ষা করতে থাকে দু’দেশের মানুষ।

তবে, এবারও বাংলাদেশ ও ভারতের উৎসুক লাখো মানুষের সেই আঙ্খাক্ষা অপূর্ণ থাকবে, ১৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে ইছামতির দু’পাড়ে বসবে না সেই মিলন মেলা।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!