খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজারঘাটে লঞ্চে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
  বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব
  নাটোরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে এক ট্রাক ড্রাইভার নিহত

সার ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি বিপাকে চৌগাছার ধানচাষিরা

চৌগাছা প্রতিনিধি

হঠাৎ করে সার ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বোরো ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছার কৃষকরা।বরাবরই এই উপজেলা ধান চাষে অনেক এগিয়ে থাকে। তবে কিছু জমিতে বিচ্ছিন্ন ভাবে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় সেটি নিয়ে বেশ চিন্তিত কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও এর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।

উপজেলার চাঁনপুর, সিংহঝুলী, তারনিবাস, কুঠিপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আগে রোপণ করা ধানে শীষ আসা শুরু হয়েছে। কিছু জমিতে বিচ্ছিন্ন ভাবে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় সেটি নিয়ে বেশ চিন্তিত কৃষক। তবে পোকার আক্রমণে ধানের ক্ষতি নিয়ে কৃষক অতটা চিন্তিত নয়। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নিয়ে।

এ অঞ্চলের কৃষকরা জানান, বোরো ধান চাষ শুরুর আগে সার কীটনাশকের দাম ছিলো এক রকম, চাষ শুরু হলে হয়ে যায় অন্য রকম। সরকার নির্ধারিত ১ কেজি ইউরিয়া সারের দাম ২২ টাকা। অথচ সেই ইউরিয়া বর্তমানে বাইরের দোকান হতে ২৪ হতে ২৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। অনুরুপ ভাবে পটাস সার ১৭/১৮ টাকা কেজি, ডিএপি কেজি একেই, টিএসপি সার ২৪/২৫ টাকা কেজি দরে কৃষককে কিনতে হচ্ছে। বর্তমান ১ কেজি দস্তা সার ৫০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে আড়াই শ টাকায়, থিয়োভিট ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকায় কিনছেন চাষিরা। প্রকার ভেদে কীটনাশকের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক শাহিনুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। এ বছর ধান রোপণ থেকে শুরু করে পাকার পর কেটে বাড়িতে আনা পর্যন্ত বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকা খরচ হবে, যা অতীতে কখনও হয়নি। ওই মাঠে কৃষক মজনুর রহমান ৯ বিঘা, ফারুক হোসেন ৭ বিঘা, মুকুল হোসেন সাড়ে ৮ বিঘা, আলম হোসেন ৯ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এসব চাষি বোরো চাষে খরচ হুহু করে বেড়ে যাওয়ায় মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

চানপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম চলতি বছরে ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। তিনি বলেন সার, কীটনাশকের দাম তো বেড়েছে, এখন আবার বিদ্যুতের দামও বেড়েছে। বিদ্যুৎচালিত মটরের আওতায় যারা ধান চাষ করেছেন তাদের বাড়তি খরচ করতে হবে। একই মাঠে কৃষক শরিফুল ইসলাম ৭ বিঘা, শাহাদৎ হোসেন ৭ বিঘা, রফিকুল ইসলাম ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এসব কৃষক বলেন, মড়ার পরে খাড়ার ঘা’র মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ধান উৎপাদনে সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি পেয়ে, পানির দাম কিছুটা কম ছিলো, এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ায় পানির দামও বাড়বে। এ বছর ধান চাষ করে শেষমেষ ভাগ্যে কি লেখা আছে তা বলা খুবই মুশকিল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, এবছর চাষিরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন। উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হলেও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে কৃষক বোরো চাষে লাভবান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!